জেলা প্রতিনিধি
২৯ জুন ২০২৫, ০৯:০২ পিএম
নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক সহ সভাপতি ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে গণপিটুনি দিয়েছে জনতা। এ সময় মুকুলকে মারতে মারতে জামাকাপড় খুলে দিগম্বর করে ফেলে তারা।
ওসমান পরিবারের দোসর আখ্যা দিয়ে তাকে বেদম মারধর করা হয়।
রোববার (২৯ জুন) নারায়ণগঞ্জের বন্দরের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের হরিপুর এলাকায় দুপুর ১টা দিকে এ ঘটনা ঘটে।
![]()
স্থানীয়রা জানায়, সকালে বন্দরের হরিপুর ৪১২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও জেলা মোটরচালক লীগের সভাপতি আলাউদ্দিনের পক্ষে ঠিকাদারি কাজ চালু করতে ঘটনাস্থলে যান মুকুল। এক পর্যায়ে স্থানীয়রদের সাথে বাদানুবাদ হলে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে মুকুলকে পিটুনি দেয়। এ সময় তার পরনে থাকা পাঞ্জাবি ও পায়জামা ছিঁড়ে ফেলে তারা। খবর পেয়ে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মুকুলকে উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, একদল ব্যক্তি তাকে মারধর ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে তার পরনের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে বিবস্ত্র করে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সাবেক বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুলকে উদ্ধার করে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে।
ইতোমধ্যে হেনস্তার ঘটনার একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
![]()
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি আতাউর রহমান মুকুলকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছেন। তার পাঞ্জাবি প্যান্ট খুলে বিবস্ত্র করা হয়েছে। পরনে ঝুলন্ত ছেঁড়া কাপড় ধরে এক ব্যক্তি তাকে টেনে হেঁচড়ে কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। এ সময় পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে একটি অটো রিকশায় তুলে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যায়।
পরে জানা যায়, আহত আতাউর রহমান মুকুলকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী জানান, হামলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মুকুলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কোনো মামলা দায়ের করা হয়নি। মামলা হলে আমরা আইনি পদক্ষেপ নেব।
মারধরের শিকার সাবেক বিএনপি নেতা আতাউর রহমান মুকুল বলেন, মদনপুরে হরিপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রে শ্রমিক নিয়োগের বিষয়ে টেন্ডার (দরপত্র) দাখিলের শিডিউল ছিল। সে কারণে তিনি সেখানে যান। এ সময় ডন বজলুর নেতৃত্বে অতর্কিতভাবে তার ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হেনস্তা করা হয়। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেন তিনি।
![]()
মুকুলের অভিযোগ, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি বজলুর রহমানোরফে ডন বজলুর নেতৃত্বে তার ওপর অতর্কিত হামলা ও হেনস্তা করা হয়েছে।
জানা যায়, আওয়ামী লীগের আমলে স্থানীয় এমপি সেলিম ওসমানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল মুকুলের। বিএনপির রাজনীতি করলেও সেসময় বন্দরে ওসমান পরিবারের আদেশ, নির্দেশই পালন করতেন মুকুল। বিভিন্ন সময় সেলিম ওসমানের সাথে বিভিন্ন সভা সমাবেশে দেখা যেত মুকুলকে। সেলিম ওসমানের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অভিযোগও রয়েছে মুকুলের বিরুদ্ধে।
সর্বশেষ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করার অভিযোগে ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর মুকুলকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।
প্রতিনিধি/এসএস