জেলা প্রতিনিধি
২৯ জুন ২০২৫, ০৬:৫২ পিএম
নড়াইলের কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিকের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবি, হেনস্তা ও ডিলারশিপ বাতিলের অভিযোগ এনে জেলা প্রশাসক ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন বিএডিসি সার ও বীজ ডিলার শেখ জামিল আহমেদ নামে এক ব্যক্তি।
রোববার (২৯ জুন) দুপুরে নড়াইলের জেলা প্রশাসক ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর
বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন শেখ জামীল আহমেদ নামে ওই ব্যবসায়ী।
তিনি কালিয়া উপজেলার মহাজন বাজারের মেসার্স আরাফাত টেডার্সের স্বত্বাধিকারী।
![]()
জামিল আহমেদ নামে ওই ব্যক্তি অভিযোগে উল্লেখে করেন, তিনি কালিয়া উপজেলার বিএডিসির সার ও বীজ ডিলার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলায় প্রান্তিক কৃষকদের কাছে সুলভ মূল্যে সার ও বীজ বিক্রি করে আসছেন। মালগুদাম জাত করার জন্য কৃষি কর্মকর্তার স্বাক্ষর প্রয়োজন হয়। প্রতিবার সাক্ষর করাতে গেলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিক মোটা অঙ্কের ঘুষ দাবি করেন, ঘুষ না দিলে হেনস্তা করে এবং ডিলারশিপ বাতিলের হুমকি দেয়। এ ছাড়া তার ডিলারশিপ বাতিল করে মহাজন বাজারের সামিউল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীকে ডিলারশিপ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। সামিউল পরে ৭০ হাজার টাকা জোগাড় করে ইভা মল্লিককে দেওয়ার কথা বললে তিনি ১ লাখ ছাড়া ডিলারশিপ দেওয়া হবে না বলে তাকে জানান। সামিউল এর বক্তব্যের ভিডিও ফুটেজ আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অভিযোগে আরও জানান, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ওই কর্মকর্তা তাকে বিএনপি করার অপরাধে বলে, আপনার ডিলারশিপ বাতিল করা হবে এবং আওয়ামী লীগপন্থি লোকজনকে ডিলারশিপ দিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। এছাড়া এই কর্মকর্তা গুদাম পরিদর্শনে গিয়ে তার পছন্দের লোকজনের কাছে গোপানে সার বিক্রির নির্দেশ দেন। তার এসব অনিয়ম মেনে না নেওয়ায় অ্যারাইভাল ও রেজিস্ট্রার খাতায় স্বাক্ষর দিতে অনীহা প্রকাশ করেন।
![]()
এছাড়া ইভা মল্লিকের দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিবাদ করায় প্রায়শই; ডিলারদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। এই কর্মকর্তার কাছে কালিয়া উপজেলার ভিলার ও কৃষকরা অসহায় এমতাবস্থায় কালিয়া উপজেলার কৃষিখাতে উন্নয়ন থমকে গেছে। তাছাড়া ইভা মল্লিকের সেচ্ছাচারিতায় সেবা প্রার্থীরা চরমভাবে ক্ষুব্ধ। তিনি ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান।
জামিলের অভিযোগে উল্লিখিত সামিউল ইসলাম বলেন, কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিক আমার কাছে ডিলারশিপ দেওয়ার বিনিময়ে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। তিনি বলেন, জামিলদের ডিলারশিপ বাতিল করে সেটি আমাকে দেবেন। পরে আমি ৭০ হাজার টাকা নিয়ে গেলে তিনি তা ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, ১ লাখের কম হলে হবে না।
তবে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে কৃষি কর্মকর্তা ইভা মল্লিক বলেন, জামিল বিএডিসির ডিলার হলেও মৌসুমি ব্যবসায়ী। মৌসুমে মাল তুলে স্বাক্ষর করাতে আসেন। ফেব্রুয়ারিতে চালানে স্বাক্ষর নিয়েছেন, মার্চে মাল তোলেননি। এপ্রিল-মে মাসে মাল তুলে নড়াইলে বিক্রি করেছেন। আমি তাকে নিয়ম মেনে নিজের ঘরে মাল তুলে কৃষকদের সার দিতে বলেছিলাম। এজন্যই তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে নড়াইলের জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. জসীম উদ্দীন বলেন, অফিসে ফিরে অভিযোগটি পড়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।
প্রতিনিধি/এসএস