জেলা প্রতিনিধি
২৮ জুন ২০২৫, ০৫:১১ পিএম
নেত্রকোনার মদনে টিসিবির চাল পাচারকালে যুবদল নেতাসহ তিনজনকে আটক করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে টিসিবির ২৫ বস্তা চালসহ তাদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
তবে থানায় নেওয়ার পথে যুবদল নেতাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। বাকি দু’জনকে থানায় নিয়ে যায়। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) শুক্রবার রাতে উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নের কাইটাইল বাজার সংলগ্ন ওয়াহেদ ইটভাটার কাছে একটি শ্যালো ইঞ্জিনচালিত হ্যান্ডট্রলি বোঝাই ২৫ বস্তা টিসিবির চালসহ তাদের আটক করে এলাকাবাসী।
পরে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে তাদের আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করে।
আটক ব্যক্তিরা হলেন, টিসিবির ডিলার শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন (৩৬), মাহফুজ (১৬) ও হ্যান্ডট্রলি চালক আলম মিয়া (৪০)। তারা তিনজন উপজেলার চানগাঁও ইউনিয়নের বাসিন্দা।
তাদের মধ্যে শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি ও মদন উপজেলার চানগাঁও ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য। গত ডিসেম্বরে তাকে অসদাচরণের কারণে যুবদলের সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনা নিয়ে মদন থানার ওসি ও ঘটনাস্থলে থাকা এসআই ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন।
দায়িত্বে থাকা এসআই সাইদুল ইসালম বলেন, আটক ব্যক্তিদের নিয়ে আসার পথে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন নামের একজন পালিয়ে যায়।
আর ওসি নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, সেনাবাহিনী আটক ব্যক্তিদের হস্তান্তরের আগেই কৌশলে পালিয়ে যায় ওই ব্যক্তি।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে টিসিবির ২৫ বস্তা চাল একটি হ্যান্ডট্রলিতে করে নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই তিনজন। পথে কাইটাইল বাজারের পাশে একটি ইটভাটার পাশে স্থানীয়রা চাল ভর্তি হ্যান্ডট্রলিটি জনতা আটক করে। পরে খবর পেয়ে মদন অস্থানীয় সেনা ক্যাম্প থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে হ্যান্ডট্রলিসহ চালগুলো জব্দ করে। এ সময় এ ঘটনায় যুক্ত ওই তিনজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। অভিযোগ রয়েছে- থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় কৌশলে যুবদল নেতা শামছুল হক চ্যাম্পিয়নকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। বাকি দু’জনকে থানায় নিয়ে যায়।
এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। এ দিকে ওই ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নায়েকপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (সচিব) কৃষ্ণ চন্দ্র সরকার। তিনি জানান, আমাকে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বলছে মামলায় স্বাক্ষর দিতে। তাই আমি শুধু স্বাক্ষর দিয়েছি। ৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের আমি চিনি না।
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যাওয়ার দায়িত্বে থাকা এসআই সাইদুল ইসালম জানান, আটক ব্যক্তিদের নিয়ে আসার পথে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে শামছুল হক চ্যাম্পিয়ন নামের একজন পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে চ্যাম্পিয়নকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগটি সত্য নয়। আমাদের কাছে হস্তান্তরের আগেই সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে কৌশলে তিনি পালিয়ে গেছেন। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুতই তাকে গ্রেফতার করা হবে।
প্রতিনিধি/এসএস