images

সারাদেশ

পার্বত্য চট্টগ্রামে আখ ও সাথী ফসল চাষ বৃদ্ধিতে কৃষকদের সহায়তা করা হবে

জেলা প্রতিনিধি

২৫ জুন ২০২৫, ০৩:১৫ পিএম

পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের আর্থসামাজিক উন্নয়নে আখ ও সাথী ফসল চাষ এবং গুড় উৎপাদনের গুরুত্ব তুলে ধরে এক কর্মশালায় কৃষকদের সার্বিক সহায়তা প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) জাহিদ ইকবাল।

বুধবার (২৫ জুন) সকালে বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয়ের কনফারেন্স হলে “পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায় সুগার ক্রপ চাষাবাদ জোরদারকরণ” প্রকল্পের আয়োজনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় তিনি এই কথা বলেন।

thumbnail_20250625_132657(0)

কর্মশালায় বক্তারা জানান, আখের সাথে সাথী ফসল চাষ করে কৃষকেরা একই জমি থেকে বছরে দুই-তিনটি অতিরিক্ত ফসল ফলাতে সক্ষম হচ্ছেন। এসব ফসল পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে উদ্বৃত্ত বাজারে বিক্রি করে কৃষকেরা নগদ অর্থ আয় করছেন। প্রতি হেক্টরে শুধু সাথী ফসল থেকেই কৃষকের আয় হচ্ছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। স্বল্পমেয়াদি এসব ফসল থেকে কৃষক ৩-৪ মাসেই তাদের মূলধনের একটি অংশ ফেরত পাচ্ছেন, যা আখ পরিচর্যা ও পরিবারের খরচে কাজে লাগছে।

thumbnail_20250625_120015

পার্বত্য চট্টগ্রামে উপযোগী সাথী ফসলের মধ্যে রয়েছে ফরাশসিম, মুলা, বাঁধাকপি ও গোল আলু। এছাড়াও ফুলকপি, টমেটো, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, ধনেপাতা, চিনাবাদাম, মিষ্টি আলু ও টুকাই ইত্যাদিও সাথী ফসল হিসেবে চাষ করা যাচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক (উপসচিব) জাহিদ ইকবাল বলেন পার্বত্য চট্টগ্রামে আখ ও সাথী ফসল চাষ বৃদ্ধি কারণে কৃষকদের সার্বিক সহায়তা দেওয়া হবে যাহাতে প্রকল্পের কার্যক্রম শেষ হলেও যেন কৃষক তাদের আখ চাষ ও সাথী ফসল উৎপাদন ধারাবাহিক রাখতে পারেন পরবর্তীতে অসচ্ছল চাষিদের সার্বিক সহায়তা করা হবে বলে জানান তিনি।

IMG-20250625-WA0002

বান্দরবান সদর উপজেলার জামছড়ি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ক্রাইক্ষ্যং পাড়ার আখচাষি মংবানু মারমা বলেন, তিনি ১২ বছর ধরে আখ চাষ করছেন। গত বছর ২.৫ কানি (১ একর) জমিতে রংবিলাস জাতের আখ চাষ করে ১ লাখ ২৬ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে খিরা, মুলা ও শিম চাষ করে আরও ৫০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। চলতি বছর তিনি ২ একর জমিতে আখ ও সাথী ফসল চাষ করছেন এবং এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করেছেন। তিনি আরও জানান, প্রকল্পের সহায়তায় চারা, সার, কীটনাশক ও সেচের খরচ পেয়ে আখ চাষে আরও উৎসাহিত হয়েছেন এবং জমির পরিমাণ বাড়িয়েছেন।

thumbnail_1000295099

লামা উপজেলার কৃষক নাজমুল হাসান সমীর জানান, তিনি তিন বছর ধরে আখ চাষ করছেন। ২ কানি (৮০ শতক) জমিতে আখ চাষ করে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন। সাথী ফসল আলু, বাঁধাকপি ও শিম থেকে আয় হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। আগামীতে ৫ একর জমিতে আখ চাষের পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন

ঝালকাঠিতে ভরা মৌসুমেও চালের বাজার ঊর্ধ্বমুখী

বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ এম. এম. শাহনেয়াজের সভাপতিত্বে কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন বান্দরবান সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারুফা সুলতানা খান হীরামনি, বাংলাদেশ বেতার বান্দরবানের আঞ্চলিক পরিচালক মোস্তফা সরোয়ার, কৃষিবিদ কনসালটেন্ট করেছেন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. মাহবুবুল ইসলাম, কৃষক প্রতিনিধি মংবানু মারমা, নাজমুল হাসান সমীর, ও আপ্রুসিং মার্মা। কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা কৃষি কর্মকর্তারা ও মাঠপর্যায়ের কৃষকেরা অংশগ্রহণ করেন।

প্রতিনিধি/এসএস