images

সারাদেশ

কক্সবাজারে ঈদ উপলক্ষে ৬ লাখ পর্যটক আসবে, নিরাপত্তা জোরদার

০৬ জুন ২০২৫, ০৩:১৩ পিএম

পবিত্র ঈদুল আজহার ১০ দিনের ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ভ্রমণে আসবেন প্রায় ৫-৬ লাখ পর্যটক। ইতিমধ্যে শহরের তারকা মানের হোটেলগুলোর ৮৫ শতাংশ এবং অন্যান্য হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টের প্রায় ৭০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে।

পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদের ছুটি এবং বর্ষা মৌসুমে উত্তাল সমুদ্র ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে অনেক পর্যটক কক্সবাজারে আসবেন। এবারের ঈদে পর্যটকদের জন্য সমুদ্র সৈকত উপভোগ করার এক অনন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে, কারণ অন্যান্য সময়ের তুলনায় এবার চাকরিজীবীদের জন্য লম্বা ছুটি মিলেছে। ফলে, এই ঈদে অন্তত ৫-৬ লাখ পর্যটক কক্সবাজারে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা বর্ষাকালেও ব্যবসার উন্নতি ঘটাবে।

ভ্রমণকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সী-সেইফ লাইফ গার্ড সংস্থা ও ট্যুরিস্ট পুলিশ তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, কক্সবাজার শহরে পর্যটকদের রাত্রিযাপনের জন্য প্রায় ৫০০ হোটেল, মোটেল, কটেজ ও ফ্ল্যাট রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে এসব আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলো নতুনভাবে সাজানো হয়েছে, তবে এখনো পর্যটকদের ব্যাপক সাড়া মেলেনি।

ওশান প্যারাডাইস হোটেলের পরিচালক আব্দুল কাদের মিশু জানান, ঈদের পর পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে। ইতিমধ্যে ৮০-৮৫ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ৯-১৩ জুন পর্যন্ত কক্সবাজারে লাখের কাছাকাছি পর্যটক অবস্থান করবে।

কলাতলী-মেরিন ড্রাইভ হোটেল-রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, বর্ষা মৌসুমের কারণে গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে পর্যটকদের সাড়া কিছুটা কম হতে পারে। তবে সমিতির আওতাভুক্ত হোটেল-মোটেলগুলোর ৩০-৪০ শতাংশ রুম বুকিং হয়েছে এবং বৃষ্টি কমলে ঈদের কয়েকদিন পর পর্যটকের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে তারা আশা করছেন।

পর্যটন ব্যবসায়ী আবদুর রহমান জানান, বর্ষার কারণে এবারের ঈদে পর্যটকদের সাড়া কিছুটা কম হলেও, লম্বা ছুটির কারণে কক্সবাজার শেষদিকে পর্যটকদের কোলাহলে মুখরিত হবে বলে তারা আশা করছেন।

এদিকে, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার নিত্যানন্দ দাশ জানান, ঈদুল আজহাতে কক্সবাজারে কয়েক লাখ পর্যটকের আগমন ঘটতে পারে। পর্যটকদের আনন্দমুখর ভ্রমণ নিশ্চিত করতে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সৈকতের গোলঘরে পুলিশ অবস্থান করবে এবং মোবাইল টিমসহ সাদা পোশাকের পুলিশ সমুদ্র সৈকতে দায়িত্ব পালন করবেন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের পর্যটন সেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাফিস ইনতেসার নাফি বলেন, ঈদের ছুটিতে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আবাসন প্রতিষ্ঠানগুলোকে পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এবং রেস্তোরাঁয় খাবারের মূল্য তালিকা টানানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এসব বিষয় মনিটরিং করা হচ্ছে।

ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের জন্য কক্সবাজারে হিমছড়ি, ইনানী, পাতুয়ারটেক, মেরিন ড্রাইভ এবং রামুর বৌদ্ধ বিহারসহ বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্থান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, প্রশাসন, ব্যবসায়ী ও নিরাপত্তা বাহিনীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এবারের ঈদে কক্সবাজারে নিরাপদ ও আনন্দমুখর ভ্রমণের পরিবেশ নিশ্চিত হবে।

প্রতিনিধি/একেবি