জেলা প্রতিনিধি
০৫ জুন ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে মাগুরার বিভিন্ন পশুর হাটে গরু নিয়ে ঘুরছেন বিক্রেতারা, কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা আশানুরূপ নয়। গত বছর বিভিন্ন স্থানে গরু সরবরাহ করে ভালো দাম পেয়েছিলো খামারিরা, তবে এবারের পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। পশু কিনতে আসা ক্রেতাদের সংখ্যা কমে যাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন খামারিরা।
মাগুরার রামনগর, কাটাখালি, সারঙ্গদিয়া পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, কোরবানির ঈদ আসতে আর মাত্র একদিন বাকি থাকলেও বেচাকেনা তেমন জমেনি। অনেক বিক্রেতা তাদের গরু নিয়ে হাটে এসেছেন, আশা করছেন ভালো দাম পাবেন, কিন্তু ক্রেতা সংখ্যা কম হওয়ায় তারা হতাশ। বেশ কিছু বিক্রেতা গরু নিয়ে ফেরতও যাচ্ছেন, কারণ তাদের আশা করা দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
নিজনান্দুয়ালী গ্রামের খামারী লিটু মিয়া জানান, ‘এবার গরুর দাম কম। দেড় লাখ টাকার গরু এখন ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সারা বছর খরচ করে গরু লালন-পালন করেছি, কিন্তু খরচের টাকাও উঠছে না।’ তিনি আরও বলেন, এবারের হাটে দেশি গরু বেশি পাওয়া যাচ্ছে এবং দামও নাগালের মধ্যে, তবে ক্রেতাদের মধ্যে আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে।
জেলা প্রাণীসম্পদ অফিস জানায়, মাগুরায় কোরবানির জন্য চাহিদার তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেশি গবাদি পশু সরবরাহ করা হয়েছে। জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ৪টি উপজেলায় কোরবানির জন্য মোট ৬৬ হাজার ৯৮৭টি গোবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে, যেখানে সরবরাহ আছে ৮১ হাজার ৭৭৩টি। সুতরাং, বেশ কিছু পশু অতিরিক্ত হয়ে যাচ্ছে, যা ঢাকার মতো বড় শহরগুলোতে সরবরাহ করা হবে।
রামনগর পশুর হাট কতৃপক্ষ জানান, এবারে বিদেশী গরু আমদানি না হওয়ায় হাটগুলো শুধু স্থানীয় খামারী ও গৃহস্থ ক্রেতার উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। ফলে, স্থানীয় বাজারে খামারিরা যে দাম চাচ্ছেন, তা অনেক ক্ষেত্রেই ক্রেতাদের কাছে মানানসই হচ্ছে না।
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা মিহির কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘এ বছর জেলার চাহিদার তুলনায় প্রায় ২০ শতাংশ বেশি গবাদি পশু রয়েছে। প্রতিটি হাটে ভেটেনারি মেডিকেল টিম আছে, যারা স্থানীয় খামারীদের পশু স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মোটাতাজা করতে সাহায্য করেছে।’ তিনি আরও জানান, জেলার চাহিদা মিটিয়ে বাইরের জেলাগুলোতে সরবরাহ করা হবে।

এদিকে, ঈদকে সামনে রেখে খামারিরা আশাবাদী যে শেষ মুহূর্তে হাটে বিক্রি বাড়বে এবং তারা তাদের পশুর জন্য ন্যায্য মূল্য পাবেন।
প্রতিনিধি/একেবি