images

সারাদেশ

সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যা আরও ‘ভয়াবহ হচ্ছে’

জেলা প্রতিনিধি

১৮ জুন ২০২২, ০১:৩৮ পিএম

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারী বর্ষণে সিলেট বিভাগের বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে আরও দুই দিন বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় এই জেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকায় পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সুনামগঞ্জ জেলায়। এই জেলার ৯০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে আছে।

পানির স্রোতে ভেঙে যাচ্ছে কাঁচা ঘর-বাড়ি। চারিদিকে থৈ থৈ করছে পানি। পানিতে ভাসছেন মানুষ, ভাসছে প্রাণী। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এমন ভয়াবহ বন্যা দেখেনি সিলেটের মানুষ। সিলেটবাসীর মানবিক সংকটের এই দু:সময়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সেনাবাহিনী।

বানের পানিতে সিলেট নগরীর ২৫ ও ২৬ নং ওয়ার্ডের (দক্ষিণ সুরমা) অধিকাংশ এলাকা পানিতে নিচে তলিয়ে আছে। দক্ষিণ সুরমার খোজার খলা, মেনিখলা, কদমতলী, বরইকান্দিসহ আশপাশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। সিলেটের পুরাতন রেল স্টেশন ও কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকা পানিতে থৈ থৈ করছে। চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। পানির কাছে অহসায় হয়ে পড়েছেন সিলেটের মানুষ।

flood-sylhetজানা গেছে, ইতোমধ্যে সিলেট বিভাগের ৮০ শতাংশ এলাকা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জের ৯০ শতাংশ এলাকা ডুবে গেছে। আগামী সোমবারের আগে এই পানি নামার সম্ভাবনা কম। কারণ উজানে আগামী দুই দিন ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।

বন্যা পরিস্থিতির ভয়ঙ্কর অবনতি হওয়ায় সারাদেশের সঙ্গে সিলেটের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। টেলিফোন নেটওয়ার্ক অকার্যকর হয়ে গেছে। বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে জেলা দুটি। পানির সঙ্গে যুদ্ধ করছেন দুই জেলার অন্তত ২০ লাখ মানুষ।

সিলেট নগরের ৩০টি এলাকার পাশাপাশি কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট, সিলেট সদর, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, ফেঞ্চুগঞ্জ, বালাগঞ্জ, বিশ্বনাথ ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার দুই সহস্রাধিক গ্রাম পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে শুধু সিলেট জেলার কমপক্ষে ১০ লাখের বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। একইসঙ্গে সুনামগঞ্জেও প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি ।

sylhet4স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় হু হু করে পানি বাড়তে থাকায় আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটছে দুই জেলার বাসিন্দাদের। সিলেট নগরসহ সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার বিস্তৃর্ণ এলাকা তলিয়ে গেছে।

স্থানীয়রা জানান, গত বন্যা ২০০৪ সালের বন্যাকে অতিক্রম করেছিল। এবারের বন্যা ১৯৮৮ সালের বন্যাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। অবস্থা এতই বেগতিক যে মানুষ এখন আশ্রয়ও পাচ্ছেন না।

সুরমা-কুশিয়ারার পানি ক্রমাগত বাড়ছে। এতে বেশি প্লাবিত হয়েছে সিলেটের সীমান্তবর্তী অঞ্চল কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট ও কানাইঘাট উপজেলার বিস্তীর্ণ জনপদ। বানের জলে ভেসে যাচ্ছে কাঁচা ও টিনশেড বাড়িঘর। অনেক জায়গায় নদী ভাঙনও দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় সরকারি সহায়তা পৌঁছাতে সমস্যা হচ্ছে।

এমআর