জেলা প্রতিনিধি
১৮ জুন ২০২২, ১১:১৩ এএম
রাতে পানি কিছুটা কমলেও ভোর থেকে আবার বাড়ছে নদীর পানি। ফলে শনিবার (১৮ জুন) সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে সিলেটের ভেলাগঞ্জ উপজেলা কার্যত সবদিক থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় এলাকাগুলোতে নৌকার জন্য হাহাকার দেখা দিয়েছে। নৌকার অভাবে প্লাবিত এলাকার মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারছেন না। জলমগ্ন ঘরেই আটকে পড়েছেন তারা। এদিকে, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ পানিবন্দিদের উদ্ধারের জন্য নৌকা খুঁজছেন সাধারণ মানুষ ও স্বেচ্ছাসেবকরা। বাড়তি টাকা দিয়েও সহজে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত নৌকা। ফলে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা স্বজনেরা তীব্র উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন।
এই সুযোগে নৌকাচালকরা ভাড়া অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নগরীর দর্জিবন্দের বাসিন্দা কামাল আহমদ বলেন, সকাল থেকে একটা নৌকা ভাড়া করার চেষ্টা করছি। বিশ্বনাথের কামালবাজার মাধবপুর গ্রামে আমাদের বেশ কিছু আত্মীয়-স্বজন বন্যায় গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। বিদ্যুৎ ও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে তারা খুব সমস্যায় রয়েছেন। তাদের আনার জন্য নৌকা ভাড়ার চেষ্টা করেও পাচ্ছি না।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জের বাসিন্দা নিহাল আহমদ বলেন, "আমার পুরো পরিবার পানিবন্দি হয়ে আছে। কিন্তু তাদের আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়ার মতো কোন নৌকা পাইনি। বাধ্য হয়ে ১৮ হাজার টাকা দিয়ে একটি ডিঙি নৌকা কিনেছি। অন্য সময় এগুলো তিন হাজার টাকায় পাওয়া যায়।
গোয়াইনঘাট থেকে আসা আকলিমা বলেন, নৌকা ভাড়ার কোনো লাগাম নেই। একটা নৌকা ভাড়া ২-৩ হাজার টাকা বলছে। গরিব মানুষ। তারপরও ছোট বাচ্চাদের নিয়ে বাঁচার জন্য এসেছি।
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটে নদ-নদীর পানি বাড়ায় বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ১৯৯৮ সালের জুন মাসে সিলেট বিভাগে অনেকটা এমন বন্যা হয়েছিল। কিন্তু এরপর বেশির ভাগ বন্যা মূলত হাওর ও সুনামগঞ্জের নিম্নাঞ্চল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল। ২০১৯ সালে সুনামগঞ্জ ও সিলেট শহরে দুই–তিন দিনের জন্য হঠাৎ বন্যা হয়। কিন্তু পুরো সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকা প্লাবিত হওয়ার মতো বন্যা হয়নি। ইতোমধ্যে সিলেটে বিভিন্ন উপজেলায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। শহরে গাড়ির বদলে চলছে নৌকা।
প্রতিনিধি/এইচই