images

সারাদেশ

দুই দশক পর কিশোরগঞ্জে জামায়াতের বিশাল কর্মী সম্মেলন

জেলা প্রতিনিধি

৩১ মে ২০২৫, ০৫:০৮ পিএম

দুই দশকেরও বেশি সময় পর খোলা মাঠে লক্ষাধিক কর্মী-সমর্থকের উপস্থিতিতে কিশোরগঞ্জে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা পর্যায়ের কর্মী সম্মেলন।

শনিবার (৩১ মে) সকাল ৯টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ শহরের পুরাতন স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ সম্মেলনে নেতাকর্মীদের মাঝে ছিল ব্যাপক উদ্দীপনা ও উৎসাহ।

জেলার ১৩টি উপজেলার ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সকাল থেকেই কর্মীরা সম্মেলনস্থলে আসতে শুরু করেন। শহরের প্রধান সড়কজুড়ে ছিল ব্যানার, ফেস্টুন ও ইসলামি স্লোগানে সজ্জিত মিছিলের দৃশ্য।

জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো. রমজান আলীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দলের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির অধ্যাপক মো. মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিচার একটি সুবিচার হয়েছে। যারা অন্যায়ভাবে মানুষ হত্যা করেছে, সেই দল ও তাদের সহযোগীদেরও বিচার হওয়া উচিত।’

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা বলি—আগে বিচার, তারপর সংস্কার, তারপর নির্বাচন। যারা শুধু নির্বাচনের কথা বলে কিন্তু সংস্কার চায় না, তারা প্রকৃত গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না।
২০১৪ সালে নির্বাচন হয়েছে বিনা ভোটে, ২০১৮ সালের দিনের ভোট হয়েছে রাতে, আর ২০২৪ সালে নিজেদের মধ্যে ভোট দিয়ে তৈরি করেছে ‘ডামি নির্বাচন’।
বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন চায়, তবে যেনতেন নির্বাচন নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী মদিনার আদলে একটি ইসলামি রাষ্ট্রব্যবস্থা কায়েম করতে চায় এবং সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ এ সময় তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন—কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, সাংগঠনিক সেক্রেটারি ড. মাওলানা সামিউল হক ফারুকী, ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ। তারা বলেন, ‘রাজনৈতিক সহনশীলতা ও জনসম্পৃক্ততা ছাড়া দেশে কোনো টেকসই রাজনীতি সম্ভব নয়।’

সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা নাজমুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ডা. কর্নেল (অব.) জেহাদ খান, সাবেক জেলা নায়েবে আমির মোসাদ্দেক আলী ভূঁইয়া, ঢাকা মহানগর উত্তরের মজলিসে শুরা সদস্য অ্যাডভোকেট মো. রোকন রেজা শেখ, জেলা প্রচার সেক্রেটারি শামসুল আলম সেলিম, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি খালেদ হাসান জুম্মন, সদর উপজেলার আমির কারী নজরুল ইসলাম এবং জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসান আল মামুন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সম্মেলনের মাধ্যমে জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক পুনর্জাগরণ ঘটেছে। দীর্ঘদিন নিষ্ক্রিয়তা ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পর মাঠ পর্যায়ে এমন বিশাল উপস্থিতি দলটির ভবিষ্যৎ কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।

প্রতিনিধি/একেবি