জেলা প্রতিনিধি
২৮ মে ২০২৫, ০৭:৩৬ পিএম
সাগর উত্তাল থাকায় গত তিন দিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে দ্বীপবাসীর নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীতে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে বৈরী আবহাওয়ার কারণে দ্বীপে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটের সার্ভিস বোট মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ আহমদ জানান, বৈরী আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় তিন দিন ধরে এ রুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সংকট দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি দ্বীপের মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ায় দুর্বিষহ সময় পার করছেন। সকাল থেকেই সেন্টমার্টিনে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে মাছ ধরার ট্রলারগুলো টেকনাফে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে দ্বীপের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
অন্যদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের প্রভাবে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল হয়ে উঠেছে এবং পানির উচ্চতা বেড়েছে। কক্সবাজারসহ উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকে এসব অঞ্চলে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। পরিস্থিতি বিবেচনায় দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করা হয়েছে।
এদিকে, সাগরে পানির উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে টেকনাফ সীমান্তের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়া এলাকায় নাফ নদীর ঢেউ বেড়িবাঁধে আঘাত হানছে। এতে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে এবং ওই এলাকায় বসবাসকারী মানুষ চরম আতঙ্কে রয়েছেন।
শাহপরীর দ্বীপের জালিয়াপাড়ার বাসিন্দা মিনার উদ্দিন বলেন, সকাল থেকেই প্রবল ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। নাফ নদীর ঢেউ বেড়িবাঁধে প্রচণ্ডভাবে আঘাত করছে। নদীতীরবর্তী অর্ধশতাধিক পরিবার এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, নৌযান চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এর ওপর আজ সকাল থেকে শুরু হওয়া ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে দ্বীপের মানুষ আরও বিপদে পড়েছে। সাগরের পানির উচ্চতা বাড়ায় জনজীবন একেবারে অচল হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী ট্রলার ও সব ধরনের নৌযান চলাচল আপাতত বন্ধ রয়েছে। তবে আগেভাগেই দ্বীপে থাকা জেলেসহ প্রায় আড়াই হাজার মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পুনরায় নৌযান চলাচল শুরু হবে বলে তিনি জানান।
প্রতিনিধি/একেবি