জেলা প্রতিনিধি
১৫ মে ২০২৫, ১০:৩৩ এএম
সিরাজগঞ্জের আকাশে তখনও বিষাদের ছায়া, আর গ্রামের বাতাসে বাজছিল সাম্যের জন্য একসঙ্গে উচ্চারিত শত শত মানুষের দোয়া। ছোটবেলার মা হারানো এই ছেলেটি প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো। মায়ের ভালোবাসা না পেয়েও সফলতার ছোঁয়া পাওয়া এই যুবকের মৃত্যুর খবর কেউই মেনে নিতে পারছেন না।
বুধবার (১৪ মে) নিজ জন্মভূমিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র ও স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্য।
এ দিন রাত সাড়ে ১০টায় নিজ গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচির সড়াতৈলে দাফন করা হয়েছে। ঢাকা থেকে সাম্যের মরদেহের সঙ্গে সিরাজগঞ্জে আসেন তার প্রায় ৫০-৬০ জন বন্ধু। উপস্থিত সবাই চোখের জলে প্রিয় বন্ধুকে বিদায় জানান।
এর আগে স্থানীয় জান্নাতুল বাকী কবরস্থান সংলগ্ন হাফিজিয়া মাদরাসা মাঠে জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এ জানাজায় মানুষের ঢল নামে। মাঠের আনাচে-কানাচে মানুষে ভরে যায়। জানাজা নামাজটি পড়ান সাম্যের আপন মামা মাওলানা জাহিদুল ইসলাম।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন - ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম সেরাজসহ পরিবারের সদস্যরা।
সাম্যের বন্ধু এস এম নাহিয়ার ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সাম্য সম্মুখ সারিতে থেকে লড়াই করেছে। নতুন করে স্বাধীন হওয়া এই দেশের রাজপথেই তার রক্ত ঝরল - এটা মেনে নেওয়া যায় না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, ‘সাম্যের এই নিষ্ঠুর হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে ছাত্রদল।’
পরিবারের পক্ষে সাম্যের চাচা মো. মাহবুব বলেন, ‘সে ছিল মায়ের সবচেয়ে প্রিয় সন্তান। সবার আগে তাই মায়ের কাছেই চলে গেল। আমার ভাতিজাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই সব সত্য দ্রুত প্রকাশ হোক।’
নিহতের বড় ভাই সর্দার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা থেকে তার এত বন্ধু এসেছে, আমি কল্পনাও করিনি। সবাই ওকে ভালোবাসতো, ওর জন্য আপনারা সবাই দোয়া করবেন।’
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) আমিরুল ইসলাম খান আলিম মুঠোফোনে বলেন, ‘সাম্য আমাদের গণতন্ত্রের লড়াইয়ের সাহসী সৈনিক ছিল। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
প্রতিনিধি/ এমইউ