images

সারাদেশ

খনন ও সৌন্দর্যবর্ধনে নাব্যতা ফিরে পাচ্ছে করতোয়া নদী

জেলা প্রতিনিধি

০৭ মে ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম

দীর্ঘদিনের দখল ও দূষণের কবলে পড়ে করতোয়া নদী তার স্বাভাবিক প্রবাহ ও রূপ হারিয়েছিল। কালের প্রবাহে হারিয়ে যেতে বসেছিল সেই করতোয়া। পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী খনন করে পানি প্রবাহ ধরে রাখার পাশাপাশি নদীর হারানো যৌবন ফিরে আনার কাজ শুরু করেছে। এতে করে নদীর হারানো নাব্যতা ও গভীরতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি নদীর পাড়ও হয়ে উঠছে আকর্ষণীয় ও পরিবেশবান্ধব।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাস্তবায়নে শাজাহানপুর উপজেলার মাদলা থেকে সদর উপজেলার মাটিডালি পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার করতোয়া নদী পুনঃখননের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে মাটিডালি থেকে নওদাপাড়া পর্যন্ত আরও ১১ কিলোমিটার খননের কাজ শুরু হয়েছে। পুরো প্রকল্পে মোট বরাদ্দ হয়েছে প্রায় ৫৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৭ কোটি ১০ লাখ টাকায় নদী পুনঃখনন ও স্লোপ প্রটেকশন, এবং অতিরিক্ত ৯ কোটি টাকায় চলছে নতুন খনন কাজ।

নদীর সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বগুড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এসপি ব্রিজ থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পর্যন্ত ৭৩০ মিটার নদীতীর উন্নয়নকাজ  ৯০ ভাগ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। নদীর দুই পাড়ে

নির্মাণ করা হচ্ছে ২১ ফুট প্রশস্ত ওয়াকওয়ে, বসানো হচ্ছে ঝলমলে সৌরবিদ্যুৎ চালিত লাইট, রঙিন টাইলস, তিন ফুট ড্রেন, ১৪টি রঙিন ছাতা ও বেঞ্চ। এ ছাড়াও ওয়াকওয়ে নির্মাণের পাশাপাশি স্ল্যাবিংয়ের মাধ্যমে তীর সংরক্ষণের কাজও চলছে।

করতোয়া নদীর উজানে গাইবান্ধা জেলার কাটাখালীতে ১৯৮৮ সালে বাঁধ নির্মানের কারনে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। যার কারনে করতোয়া নদী ভাটির দিকে মরা খালে পরিনত হয়। সেই উজানের বাঁধ অপসারন করে পানি প্রবাহ স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বগুড়ার জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা কাটাখালিতে নদীর   খুলসি পয়েন্ট পরিদর্শন করেছেন। 

পানি উন্নয়ন বোর্ড বগুড়ার নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক জানান, নদীর দুই পাশে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। এর ফলে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা সুরক্ষিত থাকবে এবং নদী হবে আরও দৃষ্টিনন্দন। তিনি জানান, খননের মাধ্যমে নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহ স্বাভাবিক হবে, যা অগ্নি নির্বাপণ, কৃষি সেচ ও মৎস্য আহরণে সুবিধা দেবে।

জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা জানান, করতোয়া শুধু একটি নদী নয়, এটি বগুড়ার ইতিহাস ও সংস্কৃতির অংশ। আমরা চাই করতোয়ার হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে। নদীর পুনঃখননের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষা, জলাধার সংরক্ষণ এবং জনসাধারণের জন্য একটি সুস্থ বিনোদন পরিবেশ নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য। অবৈধ দখল উচ্ছেদ এবং নদী সংরক্ষণের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। দখলমুক্ত ও দূষণমুক্ত করতোয়া গড়তে জেলা প্রশাসন সকল সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে।

প্রতিনিধি/এজে