images

সারাদেশ

সোনারগাঁওয়ের বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে পাকা লিচু, বাজারে আসার অপেক্ষা

জেলা প্রতিনিধি

০৬ মে ২০২৫, ১২:৫০ পিএম

থোকায় থোকায় লিচু শোভা পাচ্ছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের লিচু বাগানে। এখন অপেক্ষার প্রহর। আর কয়েকদিনের মধ্যে পুরোদমে বাজারে পাওয়া যাবে সোনারগাঁওয়ের বিভিন্ন জাতের লিচু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার লিচু বাগানগুলোতে এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা অর্জনের অপেক্ষায় দিনক্ষণ গুনে যাচ্ছেন। মৌসুমি এই ফল ব্যবসায়ীদের অপেক্ষার প্রহর ঘনিয়ে এসেছে। এবার বিক্রির পালা।

ভৌগোলিক ও নির্দিষ্ট জাতের হওয়ার সুবাদে দেশের অন্যান্য জেলা হতে সোনারগাঁয়ের লিচুর ফলন দ্রুত হয়। যার ফলে এর কদর দেশব্যাপী রয়েছে। বাগানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে তিন প্রজাতির লিচুর ফলন হয়ে থাকে। যেমন: পাতি লিচু, কদমী কিচু ও চায়না লিচু।

সোনারগাঁওয়ের কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, এবার ১০৭ হেক্টর জমিতে লিচু গাছ রয়েছে। আর বাগানের সংখ্যা ২৮২টি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সোনারগাঁও পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকায় সারি সারি লিচু বাগান চোখে পড়েছে। বাগানের গাছে ঝুলে থাকা থোকায় থোকায় লিচুর রঙে ছেয়ে রয়েছে। যার যত্ন নিচ্ছেন দেখভালের দায়িত্বে নিয়োজিত শ্রমিকেরা। এবারের ফলন সম্পর্কে কয়েকজন বাগান মালিক জানিয়েছেন, এবারের ফলনে তারা বেশ আনন্দিত।

সোনারগাঁ পৌরসভা বালুয়া দিগিরপাড় গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মো. জাহিদ হাসান (৫৭)। তিনি বহুবছর ধরে লিচুর বাগান করে আসছেন। প্রতিবছের ন্যায় এবারও এই ব্যবসায়ী পানাম গাবতলি গ্রামে ২১০ শতাংশ জমির ওপর ১০০ লিচু গাছ রেখেছেন।

আরও

ধানখেতে ন্যানো ইউরিয়া ব্যবহারে আশাতীত ফলাফল, কম খরচে কৃষকের আগ্রহ

বাগান মালিক জাহিদ হাসান জানান, সাড়ে ৭ লাখ টাকার ভাড়ার চুক্তিতে তিনি দীর্ঘ ৩ বছর ধরে এই বাগান করে যাচ্ছেন। প্রথম বছর ভালো লাভবান হয়েছিল। এরপর দ্বিতীয় বছর অর্থাৎ গতবছর প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা কারণে লোকসান গুনলেও এবছর আবার ফলন ভালো হয়েছে। এবার পুরো বাগানে সার্বিক খরচে ৪ লাখ টাকার মতো ব্যয় হয়েছে। আর বাগানে থাকা লিচু তিনি অন্তত ৬ থেকে সাড়ে ৬ লাখে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশাবাদী।

তিনি বলেন, তার বাগানে ১০-১১ জন শ্রমিক কাজে নিয়োজিত। যাদের প্রতিজনের পেছনে দিনপ্রতি ১ হাজার টাকা মজুরি ব্যয় হয়ে থাকে। বছরে ফল উত্তোলন সময়কালের ২০ দিনের মতো এই শ্রমিকরা কাজ করেন।

কৃষি অফিস হতে সহযোগিতা বা পরামর্শ পায় কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, কৃষি অফিস হতে তাদের কোনো সহযোগিতা করা হয় না বা পরামর্শও দেয় না।

মো. জাহিদ হাসানের বাগানের আড়াইশ গজ দূরে মো. তাজুল ইসলামের লিচু বাগান। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে তিনি লিচুর বাগান করে থাকেন।

বাগান মালিক তাজুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাসের পরবর্তী ৩ বছর ফলন মন্দ হয়েছিল। এবছর ফলন এবং বাজার খুব ভালো রয়েছে। তার দু’টি বাগান রয়েছে, যার দেখভালের জন্য ৩ জন শ্রমিক নিয়োজিত আছেন। এবছর তার ২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে বাগানের জন্য। তিনি আশাবাদী ৪ লাখে বিক্রি হবে তার বাগানের লিচুগুলো। এই ব্যবসায়ীরও অভিযোগ কৃষি অফিস হতে সহযোগিতা কিংবা পরামর্শ পান না তিনি।

সোনারগাঁ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, এই মৌসুমে লিচুর বাম্পার ফলন হয়েছে। যদি খড়া না হতো তাহলে হয়ত আরও বেশি ফলন হতে পারত। আমাদের উপজেলায় ২৮২টি বাগান রয়েছে।

বাগান মালিকদের অসহযোগিতা সম্পর্কে তিনি জানান, মূলত লিচু বাগানকে ঘিরে কোনো সহযোগিতা বরাদ্দ নেই। তবে, আমরা কিছু স্প্রে মেশিন ক্রয় করব। যা আগামী বছর বাগানিদের কাজে ব্যবহার হবে।

প্রতিনিধি/এসএস