images

সারাদেশ

চট্টগ্রামে মাওলানা রইস হত্যা: বিচার দাবিতে সড়ক অবরোধ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৫ মে ২০২৫, ০৮:০৭ পিএম

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকার সাবেক নগর সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনের হত্যার প্রতিবাদে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।

সোমবার (৫ মে) পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগরীর মুরাদপুর, ২ নম্বর গেট, বহদ্দারহাট, একে খান ও সল্টঘোলা ক্রসিংসহ বিভিন্ন স্থানে সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা।

এছাড়া জেলার হাটহাজারী, আনোয়ারা, বাঁশখালী, রাঙ্গুনিয়া, চন্দনাইশ ও পটিয়া মহাসড়কেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। কোথাও কোথাও টায়ারে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ চালানো হয়। সল্টগোলা এলাকায় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বাধা দিলে বাকবিতন্ডা ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এছাড়া অবরোধ কর্মসূচি পালনের সময় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শান্তিরহাট এলাকায় সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় অবরোধকারী ৬ কর্মী আহত হয়েছেন।

আহতরা হলেন— পোমরা ইউনিয়ন যুবসেনার সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ ফারুক শাহ, ছাত্রসেনার সভাপতি মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান, সদস্য ফরহাদ, আজিম নুর রহমান, মুহাম্মদ বেলাল ও জিহাদ আহত হয়েছেন। তারা স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ইসলামী ফ্রন্টের সভাপতি মুহাম্মদ করিম উদ্দিন হাছান হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, সারাদেশে ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাঙ্গুনিয়ার ৪টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত। কিন্তু পোমরা শান্তির হাটে অবরোধ চলাকালীন সময়ে হঠাৎ ১০-১২ জন উশৃঙ্খল লোক দলবেধে এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়।

তবে রাঙ্গুনিয়া থানার ওসি ওমর আলী অবরোধ কর্মসূচিতে হামলার বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানান। তিনি বলেন, রাঙ্গুনিয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এখানে হামলার বিষয়ে আমার জানা নেই। কেউ এ বিষয়ে কোনো অভিযোগও করেনি।

বিক্ষোভকারীরা বলেন, মাওলানা রইস উদ্দিনের খুনিরা ইসলাম, মসজিদ ও ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করেছে। রাষ্ট্রের নীরব প্রশ্রয়ে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এখনই বিচার চাই, নয়তো সারাদেশ অচল করে দেওয়া হবে।

এর আগে গত শনিবার (৩ মে) এক সমাবেশে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের চেয়ারম্যান আল্লামা কাজী মঈনউদ্দিন আশরাফী ৪ মে ‘মার্চ টু গাজীপুর’ এবং ৫ মে সারাদেশে অবরোধের ঘোষণা দেন। অবরোধের কারণে চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় সকাল থেকে গাড়ি চলাচল স্থবির হয়ে পড়ে।

অবরোধ কর্মসূচিতে আটকা পড়ে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কক্সবাজারগামী আন্তঃনগর পর্যটক একপ্রেস ট্রেন। অবরোধ চলাকালে ট্রেনটি সোমবার সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে ষোলশহর স্টেশনে আটকা পড়ে। প্রায় তিন ঘণ্টা ভোগান্তিতে পড়েন ট্রেনের যাত্রীরা।

Tourist-Ex

ষোলশহর স্টেশন মাস্টার জয়নাল আবেদিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ভোর ৬টা ১৫ মিনিটে যাত্রা শুরু করে বিকেল ৩টায় কক্সবাজার পৌঁছানোর কথা ছিল পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনের। যাত্রাপথে বিমানবন্দর রেলস্টেশন ও চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতি করে। এই ট্রেনে মোট ১৯টি কোচে ৮ শতাধিক যাত্রী ছিলেন। অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও রোগীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।

আইকে/এফএ