জেলা প্রতিনিধি
৩০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিশে পুলিশে দিয়ে তার প্রেমিকাকে ধর্ষণের ঘটনায় উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে (২৪) দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি শামছুল হুদা শামীমের স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুর্জয়কে বহিষ্কার করা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সারোয়ার জাহান এলিন ও সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহববু চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন। ছাত্রদলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তার সঙ্গে সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী নেত্রকোনা শহরের বাসিন্দা। তিনি রাজধানীর একটি কলেজে সম্মান তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করেন। ওই ছাত্রীর সঙ্গে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা ও জেলা শহরের একটি কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মুন্না মিয়ার (২৭) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। গত সোমবার তারা দুর্গাপুরে ঘুরতে যান।
তবে ওই ছাত্রের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকায় তার কথামতো তারা সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন। সোমবার বেলা ৩টার দিকে মুন্না হোটেল থেকে বের হয়ে খাবার কিনতে যান। এ সময় ওই ছাত্রী হোটেলে অবস্থান করছিলেন। এই সুযোগে ফয়সাল পুলিশকে জানান, তার বন্ধু ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুলিশ যেন দ্রুত তাকে গ্রেফতার করে। খবর পেয়ে পুলিশ মুন্না মিয়াকে আটক করে।
এদিকে এই সুযোগে ফয়সাল ওই ছাত্রীর কক্ষে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। আটক হওয়ার পর মুন্না পুলিশকে জানান, তার প্রেমিকা হোটেলের কক্ষে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। পরে পুলিশ মু্নাকে নিয়ে হোটেলের কক্ষে গেলে দরজা বন্ধ অবস্থায় ছাত্রীর চিৎকার শুনতে পান। এ সময় ছাত্রীকে উদ্ধারসহ ছাত্রদলের নেতা ফয়সাল আহমদকে আটক করা হয়। এ সময় মুন্না ও হোটেলের ম্যানেজার পিষুষ দেবনাথকেও (৩২) আটক করে পুলিশ।
দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বাদী হয়ে ছাত্রদল নেতা ফয়সালের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন। মামলায় ফয়সাল আহমদকে গ্রেফতার দেখিয়ে আজ বুধবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর ওই ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য জেলা সদরে পাঠানো হয়েছে।
ওসি মাহমুদুল হাসান আরও বলেন, মুন্না নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী হওয়ায় তাকে অন্য মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এমন অপকর্মে দায় থাকায় হোটেল ম্যানেজার পিষুষ দেবনাথকেও আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। কারণ এমন ঘটনায় হোটেল ম্যানেজারেরও দায় রয়েছে।
প্রতিনিধি/এসএস