বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এর শিক্ষার্থীদের এক দফা দাবিতে চলমান আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (গোবিপ্রবি) এর শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক ভবনের সামনে কর্মসূচি পালন করা হয়।
পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী নিঘাদ রৌদ্র বলেন, "বন্ধুগণ আপনারা ইতিমধ্যে জানেন প্রায় 48 ঘণ্টা হতে চলল কুয়েটে শিক্ষার্থীরা অনশনে বসেছে। শুধু ৪৮ ঘণ্টা না এই আন্দোলনে দুই দিনের না। কুয়েট বিএনপি'র নেতাকর্মীদের দ্বারা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছিল এর দুই মাস অতিক্রম হয়ে গেলেও ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট দেখতেই পাচ্ছে না।শুধু কুয়েট নয় আপনারা যদি বর্তমান বাংলাদেশের দিকে তাকান,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনশনে বসছে,নয়জনকে বহিষ্কার করার দাবিতে, গার্মেন্টস কারখানার দেড় লক্ষ শ্রমিক কাজ হারিয়ে আন্দোলন করছে, মেডিকেলে স্টুডেন্ট আন্দোলন করছে, পেঁয়াজ চাষিরা পেঁয়াজ খেতে আত্মহত্যা করছে, ইন্টেরিম গভর্মেন্টের কোন খবর নেই। এই ইন্টিলিম গভর্নমেন্ট কি অন্ধ? "
মানববন্ধনে ফার্মেসি বিভাগের ১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ওবায়দুল ইসলাম বলেন, "আপনারা অবগত আছেন আমরা এমন এক পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছি যেখানে কুয়েটের ভিসি এসিতে বসে থাকে আর আমার ভাই অনশন করে মেডিকেলে ভর্তি হয়। আমরা দেখেছি গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে আমাদের ভাইরা আহত হয়।তারই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত বোর্ড গঠন করে, যারা আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে ৩৭ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।এমন নির্লজ্জ ভিসি বাংলাদেশের দ্বিতীয় টি নেই। দালালি করার জন্য আপনাকে কুয়েটের ভিসি বানানো হয়নি, শিক্ষার্থীদের মর্যাদাহানি করার জন্য আপনাকে ভিসি বানানো হয়নি। আমরা আবার দেখেছি যখন ভিসিকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে,বাংলাদেশের বেশির ভাগ ভিসি এর নিন্দা প্রতিবাদ জানিয়েছে।অথচ আমার ভাই অনশন করে মেডিকেলে ভর্তি এর কোনো অনুশোচনা নেই। ৫৭ হাজার বর্গমাইল ফ্যাসিবাদ কায়েম করার জন্য সৃষ্টি করা হয়নি। জুলাই আমাদের শিখিয়েছে শহিদদের রক্তের সাথে বেইমানি করা যাবে না। শহিদদের রক্তের সাথে বেইমানি করে ভিসি তার কার্যক্রম করতে পারবে না।"
উল্লেখ্য,গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে আন্দোলন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।এতে বহিরাগত বিএনপির নেতা কর্মীরা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা চালায়,এতে আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব অ্যাকাডেমিক ভবনে তালা দেয় শিক্ষার্থীরা। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। এরই মধ্যে আবার গত ১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করে। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আমরণ অনশনে বসে শিক্ষার্থীরা।
প্রতিনিধি/ এজে