images

সারাদেশ

মাদারীপুরে ইলিশ শূন্য বাজারে আগুন দেশি মাছের দামে

জেলা প্রতিনিধি

২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৪১ পিএম

মাদারীপুরের হাটবাজারে এখন ইলিশের সুর নেই, আছে শুধু দাম বাড়ার হাহাকার। মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার ফলে জেলার কোথাও দেখা মিলছে না ইলিশের। আর এই সুযোগে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে পুকুর, খাল-বিল ও জলাশয়ের দেশি মাছ। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও লাগামছাড়া দামে ক্রেতাদের কষ্ট বাড়ছে প্রতিদিন।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত দেশের সব নদ-নদীতে ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ফলে পুরানবাজার, রাজবাড়ি ঘাট, শকুনি, আন্ধারমানিকসহ জেলার বড় হাটগুলোতে এখন ইলিশ নেই। সেই শূন্যতাকে পুঁজি করে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ও আড়তদার চড়া দামে মাছ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

মাদারীপুর শহরের পুরানবাজারে ভোর থেকেই জমে ওঠে পাইকারি মাছের বেচাকেনা। স্থানীয় জলাশয় ও পুকুরের দেশি মাছ নিয়ে আসেন জেলে ও মৎস্যচাষিরা। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও দামে কোনো ছাড় নেই।

বিক্রেতাদের দাবি, উৎপাদন খরচ বেড়েছে, পরিবহন ব্যয়ও আগের চেয়ে বেশি। তাই কিছুটা দাম বৃদ্ধি স্বাভাবিক।

জেলার ৮০টি পাইকারি আড়ত ও ১৮৬টি খুচরা বাজারে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ মাছ কিনতে আসেন। অথচ বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নজরদারি নেই বললেই চলে। এতে মাছের দাম বেড়েই চলেছে।

ভোক্তাদের ক্ষোভ স্পষ্ট
রাস্তি এলাকা থেকে আসা ক্রেতা জহিরুল মিয়া বলেন, ‘মাছ কিনতে এলেই দেখি আগের থেকে দ্বিগুণ দাম। কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই, আমরা তো অসহায়।’ আরেক ক্রেতা ভোলানাথ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ছোট মাছ হোক বা বড়, সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। আয় আর ব্যয়ের হিসাব এখন মিলছে না। প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া এটা থামবে না।’

ww

ব্যবসায়ী ও প্রশাসনের বক্তব্য
পুরানবাজার মৎস্য আড়তদার সমিতির সভাপতি মো. মোসলেম মাতুব্বর জানান, ‘আমাদের আড়তে ইলিশ নেই। স্থানীয়ভাবে চাষ করা মাছই এখন ভরসা। আমরা সমিতির পক্ষ থেকে ন্যায্য দামে বিক্রির নির্দেশ দিয়েছি।’

এদিকে মাদারীপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুল আলম বলেন, ‘বাড়তি দামে মাছ বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। কেউ যদি প্রমাণসহ অভিযোগ করে, তাহলে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব।’

ইলিশ না থাকায় দেশি মাছের চাহিদা বেড়েছে, সেটি স্বাভাবিক। কিন্তু সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকা সত্ত্বেও দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের ঠকানো অনৈতিক। বাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও কার্যকর তদারকির দাবিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছেন সচেতন নাগরিকরা।

প্রতিনিধি/একেবি