জেলা প্রতিনিধি
১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৩ পিএম
নেত্রকোনার মদনে ধর্ষণে ১২ বছর বয়সী এক কিশোর অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি চক্র সালিশের আয়োজন করেছে। পরে সালিশ থেকে ভুক্তভোগী মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গেছে অভিযুক্ত মাহিন ও তার স্বজনরা। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলার কাইটাইল ইউনিয়নের জাওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত মাহিন মিয়া জাওলা গ্রামের আরজু মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির ছাত্র।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টায় এ খবর লেখা পর্যন্ত ভুক্তভোগী কিশোরীর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় লোকজন ও ভুক্তভোগী স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই কিশোরীর বাবা গত দুই বছর আগে বিদুৎপৃষ্টে মারা গেছে। জীবিকার তাগিদে মেয়েটির মা চট্টগ্রামে পোশাক শ্রমিকের কাজ করে। মেয়েটি গ্রামের বাড়িতে বৃদ্ধ দাদির সঙ্গে বসবাস করছে। এদিকে পাশের বাড়ির মাহিন মেয়েটিকে নানা প্রলোভন দিয়ে একাধিক বার ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে শুক্রবার গ্রামে সালিশের আয়োজন করা হয়। দুই পরিবারের লোকজনের সম্মতিতে ভুক্তভোগী মেয়েটির সঙ্গে অভিযুক্ত মাহিনের বিয়ের সিদ্ধান্ত হয়। সালিশের পরপরই অভিযুক্ত মাহিন তার লোকজন নিয়ে মেয়েটিকে ঘর থেকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। এরপর থেকে অভিযুক্ত ও ভুক্তভোগীর কোনো সন্ধান মিলছে না। বর্তমানে মেয়েটির পরিবার হতাশায় পড়েছেন।
মেয়েটির দাদি জানান, মাহিন প্রায় সময়েই আমাদের ঘরে যাওয়া-আসা করতো। পরে জানতে পারি আমার নাতনী অন্তঃসত্ত্বা। মাহিন তার সঙ্গে জোর করে এসব করছে বলে আমাদের জানায়। বিষয়টি মাহিনের পরিবারকে জানালে তারা বিয়ে করাবে বলে জানায়। শুক্রবার রাতে বাড়িতে দরবার (সালিশ) করার পর আমার নাতনিকে মাহিন কোথায় নিয়ে গেছে। এখন শুনতাছি মাহিন আমার নাতির পেটের বাচ্চাটা নষ্ট করবে। কিন্তু বিয়ে করবে না।
তিনি আরও জানান, আমরা খুবই গরিব মানুষ। থানায় কীভাবে অভিযোগ করব তাও বুঝছি না। আমি এই ঘটনার সঠিক বিচার চাই।
অভিযুক্ত মাহিনের বাবা আরজু মিয়া জানান, আমরা দুই পরিবার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তাদের বিয়ে দিব। কিন্তু ছেলে মেয়ে দুই জনেই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। আমরা খোঁজাখুজি করছি।
সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন রুবেল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা গ্রামে বৈঠক করেছি। পরে শুনেছি মেয়েটিকে মাহিন জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গেছে। বৈঠকে ছেলের পরিবার খুবই খারাপ আচরণ করেছে। এ ঘটনার বিচার হওয়া দরকার।
মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাঈম মুহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ থানায় আসেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/এসএস