জেলা প্রতিনিধি
১৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪৬ এএম
ঠাকুরগাঁও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঠাকুরগাঁও জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন সমম্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আজমির শরীফ মারজীর নেতৃত্বে একটি দল জেলার বালিয়াডাঙ্গীর লাহিড়ী হাট সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে অভিযান চালায়। এসময় বিভিন্ন অনিয়ম ধরা পরে।
ঠাকুরগাঁও জেলা দুর্নীতি দমন কমিশন সমম্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আজমির শরীফ মারজীর ঢাকা মেইলকে জানান, অভিযান পরিচালনাকালে অফিসে বায়না নামা দলিল ও কবলা দলিল সম্পাদনে বেশ কিছু অনিয়ম আমাদের কাছে প্রাথমিকভাবে পরিলক্ষিত হয় এবং নথিপত্রগুলো সংগ্রহ হয়। অভিযানে ধরা পরে, ৩৩ লাখ টাকার বায়না নামা রেজিস্ট্রি দলিল ১৭ লাখ টাকা কমে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি করা হয়েছে ১৬ লাখ টাকায়। যার ফলে সরকার ১ লাখ ২৭ হাজার টাকা রাজস্ব আদায় থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এছাড়া নকল পেতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে সেবাগ্রহিতারা আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন এবং অভিযোগের সত্যতাও পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, সেবা গ্রহণ কার্যক্রম হয়রানিমুক্ত করার লক্ষ্যে অফিসের প্রধান ফটকের সামনে সরকারি ফি সংক্রান্ত তালিকা টাঙানোসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা কিছু রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করেছি। পরবর্তীতে কমিশনার বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
দুদকের এমন অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সেবা গ্রহীতারা। সেইসঙ্গে এমন অভিযান নিয়মিত পরিচালনার দাবি স্থানীয়দের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলিল লেখক জানান, নতুন সাব-রেজিস্টার আসার পর থেকে আমাদের সংসার চালানোই কঠিন হয়ে গেছে। এই সাব-রেজিস্ট্রার মোটা অংকের ঘুষ ছাড়া বণ্টননামা এবং অছিয়তনামার দলিলে স্বাক্ষর করেন না।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশবাড়ি এলাকার মাজেদুল ইসলাম বলেন, এই অফিসগুলোতে টাকা ছাড়া কোনো কাজ হয় না। টাকা দিলে কাজ হয়, না হলে ওইভাবে থেকে যায়। দুদক যদি এমন অভিযান প্রতি সপ্তাহে একবার করে পরিচালনা করে তাহলে আমরা সবাই উপকৃত হবো।
রমজান আলী নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের যে মূল্য নির্ধারণ করা থাকে তার সঠিক কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। খরচ অনুযায়ী টাকার ভাউচারও সঠিকভাবে পাওয়া যায় না। তাই অফিসগুলোতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা উচিত।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মনিশা রায় মুঠোফোনে বলেন, আমি ছুটিতে থাকায় কিছু বলতে পারছি না। তবে দুদক যে দলিল বিষয়ে অভিযোগ করেছেন। সেই দলিল গুলো খতিয়ে দেখে সত্যতা পাওয়া গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রতিনিধি/টিবি