images

সারাদেশ

খুন্তি পুড়িয়ে মেয়েকে ছ্যাঁকা দিয়ে ঝলসে দিলেন সৎ মা

জেলা প্রতিনিধি

১২ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৪ এএম

ভোলার দৌলতখান উপজেলায় স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার বিরোধকে কেন্দ্র করে রাফিয়া নামের ৪ বছর বয়সী এক শিশুর শরীরে খুন্তি পুড়িয়ে ছ্যাঁকা দিয়ে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সালমা আক্তার নামের এক সৎ মায়ের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার মেদুয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) দুপুরে শিশুটিকে ভোলা ২৫০ শস্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

নির্যাতিত শিশুটির বাবা জসিম মাঝি পেশায় একজন জেলে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, রাফিয়ার জন্মের কয়েকমাস পর তার প্রথম স্ত্রী (রাফিয়ার মা) রাহিমা বেগম মারা যান। পরে তিনি সালমা আক্তার নামে এক নারীকে বিয়ে করেন। সালমা ডিভোর্সি নারী ছিলেন এবং তার আগের সংসারে একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। আমার সঙ্গে বিয়ে হওয়ার পর তার আরেকটি কন্যা সন্তান হয়। রাফিয়াসহ ৩ সন্তান নিয়ে সালমা আমার বাড়িতেই থাকেন। প্রায়ই সালমার সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ নিয়ে আমার ঝগড়াঝাটি হয়। এরই জের ধরে গত ৯ এপ্রিল সৎ মা সালমা আক্তার রাফিয়াকে মারধর করে। আমি এর প্রতিবাদ করলে আমার অনুপস্থিতিতে ১০ এপ্রিল বিকেলে লোহার খুন্তি আগুনে পুড়িয়ে মেয়ের সমস্ত শরীরে ছ্যাঁকা দেওয়া হয়। রাতে দেরি করে বাড়ি ফেরার কারণে বাবা জসিম বিষয়টি টের পাইনি। সকালে শিশুটির রক্তমাখা জখম শরীর দেখে স্থানীয়দের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে ভোলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করি।

শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা কয়েকজন প্রতিবেশী ঢাকা মেইলকে বলেন, প্রায়ই সৎ মা সালমা আক্তার শিশুটিকে নির্মম নির্যাতন করে। সৎ মায়ের নির্যাতনে শিশুটি উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করে। রাস্তা দিয়ে যেকেউ হেঁটে গেলে শিশুটির অমানবিক কান্নার শব্দ কান পর্যন্ত পৌঁছায়।

প্রতিবেশীরা জানান, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়ার বিরোধ নিয়ে প্রতিশোধ নিতে সালমা আক্তার শিশুটিকে এভাবে অমানবিকভাবে মেরেছে। আমরা সালমা আক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

ভোলা ২৫০ শস্যা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. শেখ সুফিয়ান রুস্তম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে শিশুটির চিকিৎসা দিচ্ছি। আশা করি শিশুটি তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে।

খুন্তি পুড়িয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত সালমা আক্তার ঢাকা মেইলকে বলেন, শিশু রাফিয়া খুব বেশি দুষ্টমি করে। সেজন্য তাকে আমি মেরেছি। তবে, গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাঁকা দেইনি। তার দুষ্টমিতে বিরক্ত হয়ে তাকে শাসন করার উদ্দেশ্যে মেরেছি।

দৌলতখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, বিষয়টি কেউ পুলিশকে অবগত করেনি। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।

প্রতিনিধি/টিবি