images

সারাদেশ

৩৫ বছর পর এসএসসি পরীক্ষা দিলেন দুলু

জেলা প্রতিনিধি

১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:৫৫ পিএম

ছোট থেকেই ইচ্ছে ছিল উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করবেন। সেই লক্ষে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে পান প্রাথমিক বৃত্তি এবং স্থানীয় জামনগর দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করেন তিনি। এরপর ১৯৯০ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনায় তার স্বপ্ন ভেঙে যায়। তারপর বন্ধ হয়ে যায় তার পড়ালেখা। তবে মনের ইচ্ছা শক্তি আর মনোবল পারে সকল কিছু সম্ভব করতে। তাই দীর্ঘ ৩৫ বছর পর ৫০ বছর বয়সে আবারও এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন দুলু। 

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল)  উমরগাড়ি দারুল খায়ের সুন্নাহ দ্বি-মুখী দাখিল মাদরাসা কেন্দ্র থেকে এসএসসি দাখিল ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন।

ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন দুলু নাটোর জেলার জামনগর পশ্চিমপাড়ার মো. ছাবের আলীর ছেলে। এবং পরিবারে স্ত্রী ও তিন কন্যা সন্তান রয়েছেন। 

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে প্রাথমিক বৃত্তি পান। এরপর ১৯৮৮ সালে জামনগর দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণিতে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করেন। এরপর ১৯৯০ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষার রুমে অনাকাঙ্ক্ষিত একটি ঘটনায় তার স্বপ্ন ভেঙে যায়। বন্ধ হয়ে যায় পড়াশোনা। কিন্তু সারাক্ষণ তিনি শিক্ষিত হওবার বাসনা ছিলই।

২০২১ সালে বাগাতিপাড়া উপজেলার জামনগর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৩ নম্বর করমদোশী ওয়ার্ডের মেম্বার নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি নতুন করে লেখাপড়া করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর  পার্শ্ববর্তী রাজশাহী জেলার চারঘাট উপজেলার উমরগাড়ী দারুল খায়ের দ্বি-মুখি দাখিল মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হন। শুরু করেন কঠোর পড়াশোনা। এরপর আজ বৃহস্পতিবার এসএসসি দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। 

দেলোয়ার হোসেন দুলু ঢাকা মেইলকে বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা করে শিক্ষিত হবো। ভালো একটি সরকারি চাকরি করবো। সেই লক্ষ নিয়ে পড়াশোনা শুরু করি। ক্লাসে ১/ ২ রোলের নিচে নামেনি। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি লাভ করেন তিনি। তবে ১৯৯০ সালে বাগাতিপাড়া কেন্দ্রে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ছিলাম। কিন্তু তৎকালীন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহরাব হোসেন আমাকে বহিষ্কার করেন। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় আমার সবসব স্বপ্ন ভেঙে যায়। 

তিনি আরও বলেন, আমার পরিবারের সবাই শিক্ষিত। ৩ মেয়েকে শিক্ষিক করে গড়েছি। তারা এখন স্বাবলম্বী, চাকরি করছে। আবার মনের ইচ্ছা থেকে পড়া শুরু করলাম। এরপর চারঘাট উপজেলার উমরগাড়ী দারুল খায়ের দ্বি-মুখি দাখিল মাদরাসায় নবম শ্রেণিতে ভর্তি হই। নতুন করে আবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। সবাবাই দোয়া করবেন, যেন আগের মতো ভালো ফলাফল অর্জন করতে পারি।

প্রতিনিধি/এজে