জেলা প্রতিনিধি
০৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:১৬ পিএম
রাজশাহীর দুর্গাপুরে পরকীয়ার অভিযোগে এনে এক প্রেমিক যুগলকে আমগাছের সঙ্গে বেঁধে রেখেছে স্থানীয়রা।
বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তারা আমগাছের সঙ্গে বাঁধা ছিল। এই সময়ে তাদের পাহারা দিচ্ছিলেন গ্রাম্য পুলিশ ও এলাকার বাসিন্দারা। তবে আটক দুজনের বক্তব্যে ভিন্নতা পাওয়া গেছে।
ঘটনাটি বুধবার (৯ এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের নান্দিগ্রামে ঘটে। স্থানীয়রা জানান, আটক দুজনের ওপর মারধর করা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা আতিকুর রহমান জানান, ছেলেটির নাম আহসান হাবীব এবং তাদের দুজনের মধ্যে আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একই এলাকায় তাদের বাড়ি। বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তিনি বিল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় তিনি আহসান হাবীবের বাড়ি থেকে অশালীন কথাবার্তা শুনতে পান এবং জানালা খুলে দেখতে পান যে, তারা আপত্তিকর অবস্থায় ছিলেন। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের আটক করা হয়।
আতিক আরও জানান, আহসান হাবীব এলাকায় লম্পট হিসেবে পরিচিত এবং তার বিরুদ্ধে একাধিক নারীঘটিত বিচার ফয়সালা হয়েছে।
আটককৃত আহসান হাবীব দাবি করেছেন, তাকে কিছু স্থানীয় ব্যক্তি জোর করে আটক করেছে এবং ফাঁসানো হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী ওই নারী জানিয়েছেন, তিনি দুপুরে পটল ক্ষেত থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় আহসান হাবীব তাকে দুই হাজার টাকার লোভ দেখিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। পরে তার ডাকে সাড়া দিয়ে ঘরে গেলে স্থানীয়রা তাদের আটক করেন।
বুধবার বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থলে গ্রাম্য পুলিশ সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, চেয়ারম্যানের নির্দেশে তিনি তাদের পাহারায় নিয়োজিত আছেন এবং চেয়ারম্যান ও গ্রাম্য মাতবর এলে স্থানীয়ভাবে বিষয়টি সমাধান করা হতে পারে।
নান্দিগ্রামের গ্রাম্য মাতবর আবু সাইদ বলেন, ‘আমি পাশের বাজারে ব্যবসা করি। দোকান বন্ধ রেখে ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি। এলাকার লোকজন আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছিলেন। তাদের বলেছি, বিষয়টি আইনের হাতে তুলে দিতে। আমি দোকান বন্ধ করে ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।’
নওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজাদ আলী সরদার জানান, ‘খবর পেয়ে আমি গ্রাম্য পুলিশ পাঠিয়েছি। আমি ঘটনাস্থলে যাইনি, কারণ ধর্ষণের ঘটনার বিচার আমার অধিকার নয়। আমি তাদের থানায় খবর দিতে বলেছি।’
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুরল হুদা বলেন, ‘ঘণ্টাখানেক আগে পুলিশ পাঠানো হয়েছে এবং তাদের থানায় নিয়ে আসা হচ্ছে। তবে স্থানীয়রা তাদের বিয়ে দিতে চান।’
ওসি আরও জানান, ‘দুপুর থেকে আমগাছের সঙ্গে তাদের বেঁধে রাখা হয়েছে, এমন একটি ভিডিও তিনি দেখেছেন। তবে এটি অন্যায়।’
প্রতিনিধি/একেবি