images

সারাদেশ

স্বেচ্ছাসেবকদল নেতাকে হত্যা চেষ্টা, যুবলীগকর্মীসহ ৮ জনের নামে মামলা

জেলা প্রতিনিধি

০৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:৫২ এএম

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবকদলের এক নেতাকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে একাধিক মামলার আসামি যুবলীগ ক্যাডার সরল ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। এসময় প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে এবং এ ঘটনা কাউকে না জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি প্রাণে বেঁচে যান।

শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে এ ঘটনায় আহত স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা শাহ আলম শাহিনের বাবা আব্দুর রশিদ মোল্লা বাদী হয়ে যুবলীগের কর্মী সরলসহ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় পরিবহন টিকিট কাউন্টারের চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ ও দাবি করা ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না দেওয়ায় তাকে ধরে নিয়ে মিতালি মার্কেটের ১ নম্বর ভবনের ছাদে তুলে মারধর করা হয়।

আহত শাহ আলম শাহিন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক। তিনি দক্ষিণ সানারপাড় এলাকার আব্দুর রশিদ মোল্লার ছেলে।

অভিযুক্ত যুবলীগ কর্মী সরল (৪০) নাসিক ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাহেবপাড়া এলাকার নাদিমের ছেলে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মারামারি ও ছিনতাই ডাকাতিসহ সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা থানায় ১১টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তুলে দীর্ঘদিন ধরে সাহেবপাড়া ও সাইনবোর্ড এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই ডাকাতিসহ নানা অপকর্ম করে আসছেন। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও সরল তার বাহিনী নিয়ে এলাকায় বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার ভাই নিশাদ জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন ছাত্র সমাজের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের অন্যতম ক্যাডার। তিনিও রয়েছেন বহালতবিয়তে।

আরও পড়ুন

মেহেরপুর জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক গ্রেফতার

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শাহ আলম শাহিন সাইনবোর্ড এলাকায় বাসের টিকিট বিক্রির পাশাপাশি একটি চায়ের দোকান দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এতে বাধা দিয়ে দোকান দিতে হলে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে সরল। অন্যথায় সাইনবোর্ড এলাকায় ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। শাহিন চাঁদা দিতে অস্বীকার করে। তার জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে সরলের ভাই নিশাদ (২৮), সহযোগী সুমন (৩৫), মেহেদী (২৮), হেলাল ফরাজী (৪৫), রুদ্র (২৫), রানা (২৫) ও মিলন (৩৫) মিলে সাইনবোর্ড এলাকা থেকে শাহিন মিয়াকে টেনে হিঁচড়ে একটি প্রাইভেটকারে উঠিয়ে মিতালী মার্কেটের ১ নম্বর ভবনে তাদের টর্চার সেলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে লোহার পাইপ, হকিষ্টিক দিয়ে পেটায়। এতে শাহিন গুরুতর আহত হয়ে পড়লে তাকে সানারপাড় এলাকার পিডিকে পাম্পের পাশে ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে লোকমারফত খবর পেয়ে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়।

স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা শাহ আলম শাহিন বলেন, মারপিট করার সময় সরলের পায়ে ধরে জীবন ভিক্ষা চাই। যেভাবেই হোক ২-৩ দিনের মধ্যে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেই। এ ঘটনায় যেন আইনের আশ্রয় না নেই এবং প্রকাশ না করি এ শর্তে আমাকে জীবনে না মেরে রাত ১টার দিকে পিডিকে পাম্প এলাকায় এনে ছেড়ে দেয়।

তার আগে আমার হাতে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তারা ভিডিও করে রাখে। হুমকি দেয় এ নিয়ে মুখ খুললে এ ভিডিও প্রশাসনের কাছে দিয়ে আমাকে ছিনতাইকারী বানিয়ে দিবে।

এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত সরলের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পর থেকেই তিনি ও তার বাহিনী গা ঢাকা দিয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়। তার মোবাইল নাম্বারে ফোন করলেও বন্ধ পাওয়া যায়।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুর আলম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করি। এসময় অভিযুক্ত কাউকে পাইনি। এঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার চেষ্টা চলছে ।

প্রতিনিধি/এসএস