জেলা প্রতিনিধি
১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮:১৮ পিএম
যশোরের গদখালি ফুলের বাজার। প্রতিদিন সূর্য ওঠার আগে ফুলে ফুলে ভরে ওঠে বাজার এলাকা। ফুল চাষিরা কেউ ভ্যানে, কেউ সাইকেলে বা মোটরসাইকেলে ফুল নিয়ে হাজির হন। গোলাপ, জারবেরা, গাঁদা, গ্লাডিলাস, রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকা সহ হরেক রঙের ও সাইজের ফুলে ঠাসা থাকে বাজারটি। তবে কাঙ্খিত দাম পাচ্ছেন না বলে জানান ফুল চাষিরা।
ফেব্রুয়ারি মাসে থাকে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস, বসন্ত বরণ ও ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। এসব দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের দাম ভালো থাকার কথা। তবে, এ বছর এখনো ফুলের বাজার জমেনি। হতাশ চাষিরা, কিছুটা হতাশ ব্যবসায়ীরাও। ফুলচাষিরা বলছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও উৎপাদন তুলনামূলক বেশি হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর ফুলের দাম কমেছে।
ফুল চাষি মিলন হোসেন বলেন, ‘এ বছর গোলাপের বাজার ভালো নয়। প্রতিটি গোলাপের দাম ৭ থেকে ৮ টাকার বেশি কেউ বলছেন না। ব্যাপারীরা যে দাম বলছেন, তাতে উৎপাদন খরচ উঠে না। গত বছরের তুলনায় এ বছর অর্ধেকের কম দাম পাওয়া যাচ্ছে।’
গোলাপ চাষি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘৩৬ শতক জমিতে গোলাপ ফুল চাষ করেছি। সকালে তিন হাজার গোলাপ নিয়ে বাজারে এসেছি। এর মধ্যে ১ হাজার ২০০টি লাল গোলাপ এবং ১ হাজার ৮০০টি ক্যাপ পরানো গোলাপ রয়েছে। ক্যাপ পরানো গোলাপ ৫ টাকা ও ক্যাপ ছাড়া লাল গোলাপ সাড়ে ১১ টাকা করে প্রতিটি বিক্রি করেছি।’
বিগত বছরগুলোতে ফেব্রুয়ারিতে চার থেকে ছয় শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির টার্গেট থাকতো এখানকার চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতির। তবে, এ বছর শত কোটি টাকা টার্গেট থাকলেও ৫০ কোটি টাকা ফুল বিক্রি করা কষ্টসাধ্য বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, মান ভেদে প্রতিটি গোলাপ সাড়ে ৩ টাকা থেকে ১৪ টাকা, গ্লাডিওলাস ৬ থেকে ১২, রজনীগন্ধা ৩ থেকে ৬, জারবেরা ১০ থেকে ১৮, গাঁদা প্রতি হাজার ৫০০ টাকা, জিপসি ফুল প্রতি মুঠো ২০ ও কামিনীপাতা প্রতি মুঠো ৫০ টাকা দরে বেচাকেনা হয়েছে।
ফুলচাষি মামুন আলী, আব্দুল হান্নান, রিপন, রহমান জানান, এত কম দাম তারা আগে পাননি। গত সপ্তাহেও ফুলের বাজার চড়া ছিল, কিন্তু এখন গাঁদা ও গ্লাডিলাস কেনার খরিদ্দার নেই।

ফুলচাষি ও ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, ‘বাজার এখন খুব নিম্নমুখী। হঠাৎ শীত কমে যাওয়ায় সব ফুল একসাথে ফুটে যাচ্ছে। বাজারে সবাই বেশি বেশি ফুল নিয়ে আসছে, কিন্তু দাম পাচ্ছে না।’
প্রতিনিধি/একেবি