জেলা প্রতিনিধি
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৪ পিএম
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে চলছে উত্তেজনা। এর মধ্যেই সীমান্তে মানবিকতা দেখাল বিজিবি ও বিএসএফ। সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তের জিরো লাইনে বাংলাদেশি নাগরিক মৃত মাকে শেষবিদায় জানিয়েছেন ভারতীয় মেয়ে।
মৃত মায়ের নাম আসিয়া বেগম (৮০), তিনি সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার দেবহাটা গ্রামের মৃত শেখ মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী। গতকাল মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ বাড়িতেই তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর আগে আসিয়া বেগম ভারতে বসবাসরত তার মেয়ের কাছ থেকে শেষবিদায় নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন।
আসিয়া বেগমের মেয়ে শরিফা বেগম, ভারতের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট থানার হরিপুর গ্রামে স্বামী-সন্তান নিয়ে থাকেন। ৪ দশকেরও বেশি সময় আগে শরিফা বেগমের বিয়ে হয় ভারতে। তিনি বর্তমানে ভারতের নাগরিক।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে ঘোজাডাঙ্গা জিরো লাইনে বাংলাদেশি নাগরিক মৃত মাকে শেষবিদায় জানিয়েছেন ভারতীয় মেয়ে।
মৃত আসিয়া বেগমের নাতি শেখ মেহেদী হাসান বলেন, ‘মৃত্যুর আগে আমার দাদী আসিয়া বেগম ভারতে বসবাসরত তার মেয়ের কাছ থেকে শেষবিদায় নেওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তার মৃত্যু হওয়ায় মা-মেয়ে মিলিত হতে পারেনি। তবে আমার দাদী মৃত্যুর পর আমার ফুফু খুব কান্নাকাটি করছিল। তখন আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করি, আমরা বিজিবির সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরবর্তীতে দুই সীমান্ত বাহিনীর আন্তরিকতা ও মানবিকতার কারণে দাদীকে শেষবিদায় জানাতে আমার ফুফু উপস্থিত হতে পেরেছেন। তিনি দুই সীমান্ত বাহিনীর প্রতি পরিবার থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন।’
মায়ের শেষ যাত্রার মিলনে বিজিবির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ভোমরা কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আফজাল হোসেন এবং বিএসএফের ঘোজাডাঙ্গা কোম্পানি কমান্ডার এসি নবীন কুমার।
ভোমরা বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার আফজাল হোসেন বলেন, ‘বিজিবি ভোমরা ক্যাম্প কমান্ডের কাছে একটি মানবিক আবেদন আসে। তাতে জানানো হয়, বাংলাদেশ সীমান্তে মারা যাওয়া মাকে শেষবারের মতো দেখতে চান ভারতে বসবাসকারী মেয়ে। আমি বিষয়টি সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আশরাফুল হককে জানাই। তার অনুমতিতে ভারতীয় বিএসএফ সদস্যদের জানালে তারা এতে সম্মতি দেন। পরে বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যদের উপস্থিতিতে বুধবার দুপুরে মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখার সুযোগ করে দেওয়া হয় মেয়েকে।’
তিনি আরও জানান, ‘আবেগঘন সেই মুহূর্তে উপস্থিত স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ ঘটনা দুদেশের মধ্যে বন্ধুত্বকে আরও দৃঢ় করবে এবং সীমান্তে বসবাসকারী দুদেশের মানুষের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ মানসিকতা তৈরি করবে।’
প্রতিনিধি/একেবি