জেলা প্রতিনিধি
০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১:৫৭ এএম
রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ঘন কুয়াশায় প্রায়ই বন্ধ থাকছে ফেরি চলাচল। এ সুযোগে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে চলছে পদ্মা নদীতে যাত্রী ও মোটরসাইকেল পারাপার। এতে দুর্ঘটনার শঙ্কা থাকলেও নৌপুলিশের তেমন তৎপরতা নেই।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাষ্য, ঘন কুয়াশায় ফেরি ও লঞ্চ বন্ধ রাখার সুযোগে ঘাটের সুবিধাভোগী চক্র বাড়তি টাকা নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী ও মোটরসাইকেল পারাপার করছে। চার কিলোমিটার নদীপথ পাড়ি দিতে যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ১০০-২০০ টাকা এবং মোটরসাইকেল পারাপারে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে। কখনও কখনও এর চেয়ে বেশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
সরেজমিনে সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন ঝুঁকি নিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপার করছেন। ঘাট এলাকায় নৌপুলিশের সদস্যদের দেখা যায়নি। গত কয়েক দিনও একই চিত্র দেখা গেছে। ঘন কুয়াশায় ফেরি বন্ধের সময় ট্রলারে অহরহ যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
ঘাটে থাকা বাসযাত্রী মো. কামরান বলেন, এই ঘন কুয়াশায় অবৈধ অনেক ট্রলার চলাচল করছে। এখানে উচিত ছিল কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া। কিন্তু কোনো প্রশাসনিক লোককে দেখছি না। যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা গাজীপুরগামী যাত্রী মো. সোহেল বলেন, এখানে ঘন কুয়াশার কারণে আমরা দেখতে পাচ্ছি ফেরি বন্ধ। কিন্তু নদীতে অনেক ট্রলার চলাচল করছে। আবার অনেকে দেখছি ঝুঁকি নিয়েই ট্রলারে নদী পারাপার হচ্ছে। এখানে নৌপুলিশ নেই এবং নিরাপত্তাও নেই।
কুষ্টিয়া থেকে আসা সৌরভ ও রুবেল শেখ নামের দুই মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, জরুরি কাজে সাভার যেতে হবে। কখন ফেরি ছাড়বে, কোনো নিশ্চয়তা নেই। তাই মোটরসাইকেল ভাড়া ৫০০ এবং দু’জনের ভাড়া ২০০ টাকা হলেও দর-কষাকষি করে ১০০ টাকা দিয়ে মোট ৬০০ টাকায় ট্রলারে উঠেছি।
ঢাকাগামী যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। ফেরি বন্ধ থাকায় চাকরি বাঁচাতে ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে নদী পাড়ি দিচ্ছি। আবার ট্রলারে ভাড়া নিচ্ছে ১৫০-২০০ টাকা।
এ বিষয়ে শিমুল নামের এক ট্রলারচালক বলেন, আজ কুয়াশায় ফেরি বন্ধ। ঘাটেই বসে ছিলাম। ভাবলাম দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ায় একটি ট্রিপ দিয়ে আসি। তবে কুয়াশায় নদী পার হতে বেশি সময় লাগছে।
বিআইডব্লিউটিসি কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (দৌলতদিয়া) মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন বলেন, কুয়াশায় ফেরি বন্ধ থাকলেও মাঝেমধ্যে ট্রলার ভিড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করতে দেখা যায়। এতে ফেরির ধাক্কায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা আছে। স্থানীয় নৌপুলিশকে এ বিষয়ে একাধিকবার জানানো হয়েছে। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক এনামুল হক বলেন, কুয়াশায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপারে নিষেধাজ্ঞা আছে। এরপরও যাত্রী পারাপারের কথা শুনে গত সপ্তাহে একাধিক অভিযান চালিয়েছি। পুলিশ পৌঁছানোর আগেই ওরা সটকে পড়ে। জড়িত ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রতিনিধি/ এমইউ