নিজস্ব প্রতিবেদক
০৫ জুন ২০২২, ০৪:৪০ পিএম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনারের ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে লাশের সংখ্যা। অগ্নিকাণ্ডের ১৯ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি নেভেনি আগুন। নিরলসভাবে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস ও সেনা সদস্যরা। অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনায় আরও তিনজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হলো।
সীতাকুণ্ড উপজেলা প্রশাসনের তথ্য কেন্দ্র সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। প্রশাসনের একটি চার্টে বলা হয়েছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ২০০ জন।
নিহত ৪৩ জনের মধ্যে সাতজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। আগুনে ফায়ার সার্ভিসের ২০ জন আহত হয়েছেন। দগ্ধরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নিখোঁজ আছেন আরও অনেকে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, লোকে লোকারণ্য হাসপাতাল এলাকা। দগ্ধদের চিৎকার আর স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে পুরো হাসপাতাল এলাকা। মাঝে মাঝে পোড়া মানুষের কারও মৃত্যুর খবর শোনামাত্র তাদের স্বজনরা হাউমাউ করে কাঁদছেন। আবার অনেক পোড়া রোগীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেলে এখন পর্যন্ত দগ্ধ হয়ে ১৫০ জনের ভর্তির তথ্য জানা গেছে। চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন ৮৫ জন। গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন চমেক পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) মো. আলাউদ্দিন।
শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। রাতভর আগুন নেভানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় ফায়ার সার্ভিস। রোববার বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্তও আগুন পুরোপুরি নেভেনি।
দগ্ধদের অনেকেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। আহতদের মধ্যে তিনজনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহতদের সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হচ্ছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নিহতদের মধ্যে দুইজন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ সাতজনের পরিচয় জানা গেছে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সাতজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
অগ্নিকাণ্ডে নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫০ হাজার করে টাকা ও আহত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে পরিচালক (প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল মো. রেজাউল করিমকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মো. আনিসুর রহমানকে।
কমিটির অন্য সদ্যসরা হলেন - শামস আরমান (প্রশিক্ষক, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, টিসি, মিরপুর), জহিরুল ইসলাম (সিনিয়র স্টেশন অফিসার, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, ইপিজেড, সাভার), মো. ওমর ফারুক ভূঁইয়া, ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স চট্টগ্রাম)।
এমই/এমআর