বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
০৫ জুন ২০২২, ০৮:৫৪ এএম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ ও হতাহতদের রক্ত দান করতে রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের উদ্দেশে ছুটেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কয়েকশত শিক্ষার্থী।
শনিবার (৪ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১ বাস ও ১ অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করা হয় মেডিকেলের উদ্দেশে যাত্রার জন্য। সে সময়ই দেখা মেলে চবি শিক্ষার্থীদের মানবতার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। দুটি গাড়িতে জায়গা না পেয়ে অনেকেই কোনোরকম ঝুলে ও অন্য উপায়ে মেডিকেলের উদ্দেশে যাত্রা করেন।
এর আগে আহত রোগীদের রক্তের প্রয়োজন, বিশেষ করে নেগেটিভ গ্রুপের রক্তের প্রয়োজন বলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল। এ খবর পেয়ে মুহূর্তেই রক্তদানে আগ্রহী শিক্ষার্থীদের জন্য চবি কর্তৃপক্ষ ১ বাস ও ১ অ্যাম্বুলেন্স নির্ধারণ করে দেন বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ড. শহীদুল ইসলাম।
তিনি জানান, রাত প্রায় সাড়ে ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডে যে বিস্ফোরণ হয়েছে, তাতে প্রচুর মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। চমেক কর্তৃপক্ষ রক্তের প্রয়োজন জানালে আমরা সঙ্গে সঙ্গে রাত ২টার দিকে ১টি বাস ও ১টি অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দেই। যাতে শিক্ষার্থীরা মেডিকেল গিয়ে অগ্নিদগ্ধদের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার দৃষ্টান্ত হতে পারে।
এছাড়া, চবি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে রক্তদানের আহ্বান জানানো হলে সকাল হতেই মানবতার সেবায় মেডিকেলের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমিয়েছেন আরও শতাধিক চবি শিক্ষার্থী।
ওদিকে, ‘সন্ধানী’ নামের চমেকের ব্লাডব্যাংকটির সঙ্গে সকালের দিকে কথা বললে তারা ঢাকা মেইলকে জানান, এখন পর্যন্ত অসংখ্য মানুষ রক্ত দিয়েছে। তাদের রক্ত আমরা রিজার্ভ করে রেখেছি, অসংখ্য মানুষ রক্ত দিতে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে এবং আরও অসংখ্য মানুষ অগ্নিদগ্ধ মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এগিয়ে আসছে।
প্রসঙ্গত, শনিবার (৪ জুন) রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম কনটেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুন লাগে। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে এক কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত প্রায় ১০/১৫ কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের প্রায় কয়েক কিলোমিটার এলাকার বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে।
সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা প্রায় ১৬ জন। এছাড়াও প্রায় চার শতাধিক আহত হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিকদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন। আহতদের চমেক হাসপাতালের বিভিন্ন ইউনিটে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ইলিয়াস হোসেন।
এছাড়াও জরুরি বিভাগ, বার্ন ইউনিট, সার্জারি ইউনিটসহ অন্যান্য সকল ইউনিটকেই এখন অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধদের সেবায় নিয়োজিত করা হয়েছে।
টিবি