জেলা প্রতিনিধি
০৫ জুন ২০২২, ০২:৪৪ এএম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লেগে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অন্তত শতাধিক লোক অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিকদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে বর্তমানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট। দগ্ধদের প্রতি মুহূর্তেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে দেখা যাচ্ছে। চমেক হাসপাতালে রক্তের জন্য হাহাকার চলছে।
শনিবার (৪ মে) রাতে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি সামাল দিতে চট্টগ্রামে অবস্থানরত সকল চিকিৎসককে চমেক হাসপাতালে এসে সহযোগিতার অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. ইলিয়াছ চৌধুরী।
নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম আশেক। তিনি বলেন, রাত ২টার পর পর্যন্ত ৫ জন নিহত হয়েছেন।
নিহতদের একজনের নাম মোহাম্মদ মমিনুল ইসলাম। তিনি বাঁশখালীর ছনুয়ার ফরিদুল আলমের ছেলে। বিএম কনটেইনার ডিপোতে তিনি কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
নিহত মুমিনের ভাই মো. ফয়সাল বলেন, আমার ভাই মমিনুল বিষ্ফোরণে মারা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিদর্শক নুরুল আলম আশেক বলেন, সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক মানুষকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়েছে।
এর আগে শনিবার (৪ জুন) রাত সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট কাজ করছে। ডিপোতে আমদানি ও রফতানির বিভিন্ন মালবাহী কনটেইনার আছে বলে জানা গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা বলছেন, আগুন লাগার পর বেশ কয়েকটি কনটেইনারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কনটেইনারে রসায়নিক থাকার কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিষ্ফোরণে ঘটনাস্থলের এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত অনেকেই দগ্ধ হয়েছেন। ওইসব এলাকার সকল গ্লাস ফেটে গেছে।
সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বলেন, বিস্ফোরণে তাঁদের থানার কনস্টেবল তুহিনের এক পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আরও অন্তত ৯ কনস্টেবল, ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মোতাহার হোসেন এবং শিল্প পুলিশের একাধিক সদস্য আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিসের ২১ সদস্য আহত হয়েছেন।
রাত সাড়ে ১২টায় চমেক হাসপাতালে আসেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ইলিয়াছ চৌধুরী। এসয় তিনি বলেন, এই মুহূর্তে চট্টগ্রাম শহর কিংবা আশেপাশে যে সকল ডাক্তার রয়েছেন তাদের চমেক হাসপাতালে এসে রোগীদের সহযোগিতার অনুরোধ রইল।
এদিকে ব্লাড গ্রুপের এক সদস্য সাংবাদিকদের জানান, জরুরিভাবে রক্তের প্রয়োজন। বেশিরভাগই নেগেটিভ ব্লাডের রোগী। সকলকে অনুরোধ জানাবো নিঃস্বার্থভাবে এসে রক্ত দেওয়ার জন্য।
ফায়ার সার্ভিসের ডিজি মাইনুদ্দিন বলেন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ছিল বলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের বেগ পেতে দেরি হচ্ছে। এছাড়া উৎসুক জনতার ভিড়ে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। বিষ্ফোরণে ফায়ার সার্ভিসের ২১ জন সদস্য এখন পর্যন্ত আহত হয়েছেন। ৬ জনকে সিএমএইচ ও বাকি ১৫ জনকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাত ২টায় গণমাধ্যমকে তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট কাজ করছে। এখন পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
/এএস