জেলা প্রতিনিধি
১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২১ পিএম
অবশেষে, একটি ট্রেন দিয়েই যশোর ও খুলনাবাসীকে সন্তুষ্ট করতে যাচ্ছে রেল মন্ত্রণালয়। আগামী ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার খুলনা ও যশোর থেকে নড়াইল হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় এই ট্রেন চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালকের কার্যালয়ের উপপরিচালক (টিটি) মো. খায়রুল কবির স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। ট্রেনটি খুলনা থেকে (খুলনা-ঢাকা-খুলনা) জাহানাবাদ এক্সপ্রেস নামে এবং বেনাপোল থেকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস নামে যাতায়াত করবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ স্বপ্ন দেখছিলেন। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর গত ২৪ নভেম্বর পদ্মা সেতু দিয়ে নড়াইল হয়ে ট্রায়াল ট্রেন খুলনায় পৌঁছায়। ফলে, যশোর ও খুলনা রুটে নড়াইল-পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় রেল যোগাযোগ শুরু হওয়া ছিল সময়ের ব্যাপার। নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হলে যশোর থেকে ঢাকার দূরত্ব ১৯৩ কিলোমিটার কমে যাবে। ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার গতিতে ব্রডগেজ রেললাইন দিয়ে ট্রেনটি চলবে। তবে, বগি সংকটের কারণে নতুন ট্রেন চালু করতে কিছু বিলম্ব হয়েছিল। অবশেষে একটি ট্রেন দিয়েই আপাতত এই রুট চালু করতে যাচ্ছে রেল মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ে মহাপরিচালকের কার্যালয়ের উপপরিচালক (টিটি) মো. খায়রুল কবির স্বাক্ষরিত পত্র অনুযায়ী, আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে খুলনা ও যশোর রুটে নড়াইল-পদ্মা সেতু হয়ে রেল চলাচল শুরু হবে। ট্রেন সিডিউল অনুযায়ী, সকাল ৬টায় খুলনা থেকে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ঢাকা উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবে এবং সকাল পৌনে ১০টায় ঢাকায় পৌঁছাবে। সকাল পৌনে ১১টায় ঢাকা থেকে রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বেনাপোলের উদ্দেশে রওনা দেবে। যশোর জংশন হয়ে দুপুর আড়াইটায় বেনাপোলে পৌঁছাবে। রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস বিকেল সাড়ে ৩টায় বেনাপোল থেকে যাত্রা করে সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছাবে। এরপর, ট্রেনটি জাহানাবাদ এক্সপ্রেস নামে ঢাকা থেকে রাত ৮টায় যাত্রা করে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনায় পৌঁছাবে। রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস যাত্রাবিরতি করবে (আপ ও ডাউন) যশোর জংশন, নড়াইল, কাশিয়ানী জংশন, ভাঙ্গা জংশনসহ অন্যান্য স্টেশনে। আর জাহানাবাদ এক্সপ্রেস যাত্রাবিরতি করবে নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশনে। ট্রেনটি সোমবার বন্ধ থাকবে। ট্রেনে আসন সংখ্যা ৭৬৮টি। সিডিউল অনুযায়ী, ঢাকা থেকে বেনাপোলে পৌঁছানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় পৌনে ৪ ঘণ্টা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানিয়েছে, যশোর থেকে বর্তমানে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেন ঢাকায় যাতায়াত করছে। এর মধ্যে, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসা বেনাপোল এক্সপ্রেস যশোর থেকে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ি, ভাঙ্গা হয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। আর খুলনা থেকে ছেড়ে আসা চিত্রা এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী হয়ে যমুনা সেতু দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে। এই ট্রেনগুলোর রুট পরিবর্তন (যশোর-নড়াইল-ভাঙ্গা হয়ে ঢাকা) নিয়ে ইতোমধ্যে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া ও রাজবাড়িতে রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ হয়েছে। এ কারণে, এই তিনটি ট্রেনের পুরানো রুট পরিবর্তনের পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে রেল বিভাগ। ফলে, আপাতত ওই ট্রেনগুলোর বর্তমান রুটেই চলাচল করবে।
বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাইদুজ্জামান বলেন, বেনাপোল থেকে ঢাকায় যাতায়াতের জন্য রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস নামে নতুন একটি ট্রেনের সিডিউল পাওয়া গেছে। সিডিউল অনুযায়ী, আগামী ২৪ ডিসেম্বর থেকে ট্রেনটি চলাচল শুরু করবে। একই দিনে খুলনা থেকে এই ট্রেনটি জাহানাবাদ এক্সপ্রেস নামে খুলনা-ঢাকা রুটে চলাচল করবে।
যশোর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার আয়নাল হাসান জানান, বেনাপোল-যশোর-নড়াইল-ঢাকা রুটে একটি নতুন ট্রেন চলাচলের সিডিউলের খবর পেয়েছেন।
প্রতিনিধি/একেবি