images

সারাদেশ

চাঁদার জন্য আবাসিক হোটেলে ছাত্রদল নেতাকর্মীর হানা, না দেওয়ায় ডাকাতি!

জেলা প্রতিনিধি

১৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯ এএম

images

৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে রাজশাহীতে ধারাবাহিকভাবে ছাত্রদলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদা না দেওয়ায় ‘হোটেল গ্র্যান্ড’ নামে একটি আবাসিক হোটেলে ডাকাতির অভিযোগও উঠেছে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর গণকপাড়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত পৌনে ১০টার দিকে ৮-১০ জন ব্যক্তি নগরীর গণকপাড়া এলাকায় হোটেল গ্র্যান্ডের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। একপর্যায়ে তারা ভেতরে প্রবেশ করে হোটেলটির কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ফোন কেড়ে নিয়ে তাদের অবরুদ্ধ করেন। এসময় হোটেলের মালিকপক্ষের একজন কৌশলে পুলিশকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাতে সক্ষম হন।

হোটেল গ্র্যান্ডের ম্যানেজার তৌকির আহমেদ রনি বলেন, রাত পৌনে ৯টার দিকে মুখে মাস্ক পরা ৮-১০ ব্যক্তি এসে আমাদের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমরা চাঁদা দিতে না চাইলে তারা দোতলায় একটি কক্ষে আমাদের আটকে রেখে হোটেলে ডাকাতি শুরু করে। তারা আমাদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়, আলমারি লুট করে।

হোটেলটির মালিকের ভাতিজা রোকন সরকার বলেন, ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময়ে এসে তারা ৫-১০ হাজার করে টাকা নিয়ে গেছে। জুয়েল নামে একজন ফোন দিয়ে চাঁদা চায়। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে এসে তারা ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমরা দিতে রাজি না হওয়ায় ডাকাতি করেছে।

thumbnail_IMG-20241218-WA0001

রোকন সরকার আরও বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা দু’জনের পরিচয় শনাক্ত করতে পেরেছি। তারা হলেন- রাজশাহী কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফামিম ও রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজ ছাত্রদল নেতা নাফি। তারা দু’জনই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর সাবেক বিএনপি নেতা দিলদারের ভাতিজা। ঘটনার সময় বিষয়টি আরএমপির বোয়ালিয়া জোনের এডিসি হাফিজুর রহমানকে জানানো হলে তিনি থানায় ওসিকে ফোন দিতে বলেন। বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি মেহেদি মাসুদকে জানানোর দীর্ঘ সময় পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি বলেন, ‘ওরা ছাত্রদল করে, ওরা তো সাবেক নেতা, এখনকার না। ছাত্রদলটা এডিট করে দেন, নাহলে আমাদের ওপর বর্তায়।’ কিছুক্ষণ পর তিনি বলেন, ‘আমরা আইডেনটিটি করছি সেটা। আপনারা বললেন কেন গেছে, কীসের লাইগ্যা গেছে, সেটা আমরা দেখব। কিন্তু আগেই যদি ছাত্রদল বলে দেন, তাহলে আগেই আসামি হয়ে গেলাম, তাই না?’

আরও পড়ুন

আত্মসম্মান রক্ষায় যুবলীগ নেতাকে ত্যাজ্য করলেন বাবা

এরপর সবশেষ সংবাদে ছাত্রদল উল্লেখ না করার অনুরোধ জানিয়ে মহানগর সভাপতি আকবর আলী জ্যাকি বলেন, ‘আপনি আমাকে ফোন দিলে (ঘটনার সময়) যেই করে হোক, সমাধান করতাম। যখন ছাত্রদল করে বলেছে, আমাকে একটু ফোন দিতেন, ‘জ্যাকি তোমার ছাত্রদলের ছেলেরা এখানে গেছে।’ তাহলে আমি জিনিসটা ইয়্যা করতে পারি না, তাই না? একটু ভাই, ওই ছাত্রদলটা আপনি একটু কেটে দেন ভাই।’

এ ব্যাপারে মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা বলেন, দলের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের কথা আমরাও শুনেছি। তবে এসব করে ছাড় পাওয়া যাবে না। আইন আইনের গতিতে চলবে। মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব মামুনুর রশিদ বলেন, আমাদের কেউ জড়িত থাকলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।

এ বিষয়ে আরএমপির বোয়ালিয়া মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রতিনিধি/এসএস