শরীয়তপুরে সোহেল সিপাহী হত্যায় ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মাইক্রোবাস চালক সোহেল মিয়া সিপাহী (৩৮) হত্যায় জড়িতদের ফাঁসির দাবিতে স্বজন, মাইক্রোবাস মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা মানববন্ধন করেছেন। এ সময় তারা হত্যাকারীদের ফাঁসি’র দাবি জানান।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মামলার এজাহার ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার আকনকান্দি এলাকার মোখলেসুর রহমান সিপাহির ছেলে সোহেল মিয়া সিপাহী গত ৩১ অক্টোবর ঢাকা সবুজবাগ এলাকা থেকে নিখোঁজ হন। পরদিন ১ নভেম্বর সকালে যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভার সংলগ্ন এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়। এ দিনই তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা (২৭), ঢাকা সবুজবাগ থানায় মো. নাসিরুজ্জামান রুবেল (৪২), মো. খোকন (৩৫) ও ইয়াকুব মোল্লা (২১) নামে ৩ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে জানা যায়, পাওনা টাকা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সোহেলকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে, এমনটি দাবি করেছেন সোহেলের স্ত্রী শারমিন। এই ঘটনায় মামলার দুই আসামি নাসিরুজ্জামান ওরফে রুবেল ও ইয়াকুবকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নিহতের স্ত্রী শারমিন সুলতানা বলেন, ‘যারা আমার স্বামীকে হত্যা করেছে, তারা আমার সন্তানকে এতিম করেছে। তারা অনেক নৃশংসভাবে আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি জানি না, কেউ কীভাবে এত নির্মম হতে পারে। আমার স্বামীর সাথে তাদের কোনো শত্রুতা ছিল না, শুধু টাকা পয়সার জন্য তারা তাকে হত্যা করেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।’

নিহতের মা জাহানারা বেগম বলেন, ‘যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে, আল্লাহ যেন তাদের বুক খালি করে দেয়। আমার ছেলের কোনো দোষ ছিল না। এখন আমি দুই নাতি নিয়ে অভাবের মধ্যে আছি। তাদের কে দেখবে, কে তাদের মানুষ করবে? আমি হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই।’

নিহতের খালা ঝিলু আক্তার বলেন, ‘সোহেলকে হত্যা করার পর হত্যাকারীরা যেন কোনভাবেই পার না পায়, আমরা তাদের কঠোর শাস্তি চাই। তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত, যাতে আর কোনো পরিবার তাদের স্বজনকে হারায় না।’

শরীয়তপুর জেলা মাইক্রোবাস সমিতির সভাপতি মাহাবুব আলম তালুকদার বলেন, ‘সামান্য টাকার তর্কের জেরে সোহেলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমাদের একটাই দাবি, এই হত্যাকারীরা যেন জামিনে বের না হয়, যাতে তারা পালিয়ে যেতে না পারে। এমনকি তারা সোহেলের পরিবারকে জামিনে এসে হুমকি দিতে পারে। সোহেলের দুটি ছোট ছেলে-মেয়ে রয়েছে, তারা এখন কিভাবে চলবে? সরকারের কাছে আবেদন, সোহেলের পরিবারকে আর্থিকভাবে সহায়তা করা হোক এবং তার দুই ছেলের পড়াশোনার দায়িত্ব সরকার নিক।’

প্রতিনিধি/একেবি