জেলা প্রতিনিধি
০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩৮ এএম
ঝিনাইদহ কৃষি বিপণন ভবন নির্মাণ কাজে নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার কারার অভিযোগ উঠেছে।
রোববার (৩ নভেম্বর) কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী। নির্মাণ শ্রমিকদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ঝিনাইদহ গণপূর্ত অধিদফতরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (ইলেকট্রিক) আবুল খায়ের, উপসহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. সোহাগ হোসেন, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. মহিবুল ইসলাম ও শ্রী প্রবীর কুমার পরিদর্শন করে খবর নিশ্চিত করেছেন।
সংশ্লিষ্ট উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) আরেফিন নূরের কাছে জানতে চাওয়া হলে প্রতিবেদকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। তিনি বলেন, আপনাকে বলতে হবে কেন? আপনি জানার কে? কি লিখবেন? ঢাকার অনেক সাংবাদিক আমার বন্ধু। ইত্যাদি ইত্যাদি—
চরম উত্তেজিত হয়ে উঠেন আরেফিন নুর। অভিযোগ উঠেছে এই কর্মকর্তার সঙ্গে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নিবিড় সর্ম্পক রয়েছে। যে কারণে কোনো তথ্য দিতে চাননি তিনি। তবে নির্বাহী প্রকৌশলী জেড়াল্ড অলিভার গুড্ডা বলেন, ডিজাইন ও সিডিউল মোতাবেক কাজ করা হচ্ছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে।
অভিযোগ করা হয়েছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের কৃষি বিপনন অধিদফতর জোরদার করণ প্রকল্পের অধীন ৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা খরচে ঝিনাইদহ জেলা শহরের বাইপাস সড়ক সংলগ্ন পবহাটি গ্রামে (গোবিন্দপুর মৌজা) কুড়ি শতক জমির ওপর চারতলা ভীত বিশিষ্ট তিনতলা ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। অভিযোগ, শুরুতেই বেজমেন্টে নিন্ম মানের সামগ্রী ব্যবহার করছে ঠিকাদার।
অনুসন্ধানে মিলেছে গণপূর্ত বিভাগের নিয়োগ করা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ঢাকার হাটখোলা রোডের বিএ (বাবর অ্যাসসিয়েট),-এমএস এসই (মের্সাস এসএ এন্টারপ্রাইজ) জেভি। ৩০ জুন ২০২৪ সালে গণপূর্ত অধিদফতর ও ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি সম্পাদন করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে কাজটি করছেন স্থানীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আতাফ ইন্টার প্রাইজের মালিক এনায়েতুল্লাহ নয়ন।
অভিযোগের বিষয়ে তিনি (নয়ন) সরাসরি বলেন, গণপূর্ত বিভাগের দেওয়া ডিজাইন অনুযায়ী কাজটি করা হচ্ছে। ডিজাইন অনুযায়ী কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে স্থানীয় কিছু লোকজন চাঁদা দাবি করে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে। গোপালগঞ্জের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স এসএ ইন্টারপ্রাইজের কাছ থেকে কাজটি কিনে নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন তিনি (এনায়েতুল্লাহ নয়ন)।
উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগ) মো. সোহাগ হোসেন দাবি করেছেন, সিডিউল এবং ডিজাইন মোতাবেক কাজটি শুরু করা হয়েছে। কোনো অনিয়ম দুর্নীতি ঘটনা ঘটেনি।
অনুসন্ধানকালে (৩ নভেম্বর) দেখা যায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে ঝিনাইদহ গণপূর্ত বিভাগ। নির্বাহী প্রকৌশলীর আলিশান কক্ষ তালা দেওয়া। দ্বিতীয় তলায় উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) আরেফিন নূরের কক্ষ ফাঁকা। দেখা গেল শূন্য চেয়ার, কেউ নেই সেখানে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নির্বাহী প্রকৌশলী জেড়াল্ড অলিভার গুড্ডা অধিকাংশ সময় ঢাকায় নিজ বাড়িতে অবস্থান করেন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মিটিং থাকলে ঝিনাইদহে আসেন তিনি। উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) আরেফিন নূরের একই অবস্থা। তিনিও মাসের সিংহভাগ সময় ঢাকাতে অবস্থান করে থাকেন। ছুটি নিতে হয় না তাকে। নির্বাহী প্রকৌশলী (জেড়াল্ড অলিভার গুড্ডা) বলেন, মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে হাইকোর্টে রয়েছেন। ছুটিতে আছেন কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বুঝেনতো দফতরে তেমন কাজ নেই, তাই ঢাকাতেই থাকি।
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সিভিল) আরেফিন নুরের অবস্থান কোথায় এমন প্রশ্নের উত্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী ফোনে বলেন মন্ত্রণালয়ের অনুমতি (উচ্চ শিক্ষা) নিয়ে ঢাকাতে পরীক্ষা দিতে এসেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় দফতরে এ সংক্রান্তে কোনো চিঠিপত্র নেই বলে জানান দফতরটির প্রধান করনিক (বড় বাবু) হাসানুজ্জামান।
প্রতিনিধি/এসএস