জেলা প্রতিনিধি
২৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৪:২৩ পিএম
গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিন প্রধান (৬৪)। পথে প্রান্তরে ঘুরেন হ্যান্ডমাইক নিয়ে। হেঁটে চলেন হাট-বাজার ও শহরে। নামাজের দাওয়াত দেন মুসলিমদের। এভাবে ১০ বছর ধরে হ্যান্ডমাইকে নামাজের আহবান করছেন তিনি।
স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে তাকে মাইকিং করতে দেখেনি, এমন মানুষ বোধহয় কমই আছে বলে জানালেন শহিদুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।
সম্প্রতি দুপুর ১টার দিকে গাইবান্ধার ধাপেরহাটে দেখা যায়- এই মোসলেমকে। তথন তার হাতে থাকা মাইকে জোহরের নামাজের আহবান করছেন ধর্মপ্রাণ মানুষদের।
তার বাড়ি জেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের ভগবানপুর গ্রামে। এ গ্রামের মৃত মহিম উদ্দিন প্রধানের ছেলে তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ছেলে-মেয়েসহ ৭ সন্তানের জনক মোসলেম উদ্দিন প্রধান। বয়স যখন ৪০, তখন পাটের ব্যবসা করে চলছিল তার সংসার। এরই মধ্যে এ ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হন। এরপর জীবিকার তাগিদে ঢাকায় রিকশা চালাতেন। সেখানে তাকে নামাজের তাগিদ দিতেন মসজিদের মুসল্লিরা। এরপর শুরু করেন ৫ ওয়াক্ত নামাজ। সেই থেকে আর কখনো নামাজ বাদ করেন না। ধীরে ধীরে আল্লাহ ভক্ত হয়ে ওঠেন।
এরই ধারবাহিকতায় ১০ বছরে আগে ঢাকা ছেড়ে ফিরে আসেন বাড়িতে। নিজের টাকায় কেনেন একটি ব্যাগ ও হ্যান্ডমাইক। প্রত্যেক দিন সকালে বেড়িয়ে পড়েন বিভিন্ন শহর ও হাট-বাজারে। পায়ে যেন তার বাহন। হেঁটে চলেন এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তরে। কাজ একটাই, নামাজের জন্য সবাইকে দাওয়াত দেওয়া। এছাড়া আযানের আগ মুহূর্তে হ্যান্ডমাইকে নামাজের আহবান করে চলেছেন। বিশেষ করে সাদুল্লাপুর উপজেলা শহরে তাকে মাইকিং করতে দেখেনি, এমন মানুষ বোধহয় কমই আছে। এছাড়া মীরপুরহাট, ধাপেরহাট, ঘোগার বাজারসহ আরও বেশ কিছু এলাকায় হ্যান্ডমাইক নিয়ে ঘুরতে দেখা গেছে এই মোসলেমকে।
এ বিষয়ে মোসলেম উদ্দিন প্রধান বলেন, কোরআনে আল্লাহ বলেছেন নিজে নামাজ পড় এবং অন্যকেও নামাজ পড়তে বলো। ইসলামের এই আদর্শ মেনে হ্যান্ডমাইকে হেঁটে হেঁটে মুসলমানদের নামাজ পড়ার আহবান করছি। এ কাজটি স্বেচ্ছাশ্রমে করা হচ্ছে। এতে কেউ সহযোগিতা করলে ভালো হতো।
তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে ইয়াসিন আলীর আয়ে সংসার চলে আমাদের। মানুষকে নামাজের দাওয়াতের বিষয়টি পরিবারের সবাই উৎসাহ দেয়। আমি যখন মাইকে নামাজের আহবান করি তখন অনেক লোক আমার দাওয়াত গ্রহণ করে।
সাদুল্লাপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম মিয়া বলেন, মোসলেম চাচাকে কয়েক বছর ধরে চৌমাথা মোড়ে দেখি। তিনি হ্যান্ডমাইক নিয়ে ঘুরে ঘুরে মানুষকে নামাজের দাওয়াত দেন। এটি একটি খুবই ভালো কাজ বলে মনে করছি। সবাইকে এই মানুষটির পাশে দাঁড়ানো দরকার।
প্রতিনিধি/এসএস