images

সারাদেশ

সাবেক স্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে গেলেন সেই বর

জেলা প্রতিনিধি

১৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:৪০ পিএম

গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলায় পারভীন খাতুন (২০) নামের এক গৃহবধূকে তালাক দেয় তার স্বামী শফিকুল ইসলাম (২৫)। কিন্তু স্ত্রীর দেনমোহর বুঝিয়ে না দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাচ্ছিলেন শফিকুল। এসময় বরের মাইক্রোবাস পথরোধ করেন পারভীন ও তার স্বজনরা। এতে শফিকুলসহ তার যাত্রীদের লাঠিসোঁটা দিয়ে মারধর করতে থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বর শফিকুলকে উদ্ধার করে। এরপর থানায় উভয় পক্ষ বসে পারভীনকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে থানা থেকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে গেলেন বর শফিকুল।

উভয় পক্ষের সমাধা হওয়ার বিষয়টি শনিবার (১৯ অক্টোবর) দুপুরে নিশ্চিত করেছেন সাদুল্লাপুর থানা পুলিশ।

এর আগে শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর (ফকিরপাড়া) এলাকায় বরযাত্রীর গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনা বরের ৩ যাত্রী আহত হন। 

আরও পড়ুন

আধিপত্য বিস্তারের জেরে ছুরিকাঘাত, প্রাণ গেল কিশোরের

স্থানীয়রা জানায়, গত ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ফকিরপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম পাসার মেয়ে পারভীন খাতুনের সঙ্গে রসুলপুর (মধ্যপাড়া) গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলামের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে আড়াই বছর পার হওয়ার পর প্রায় তিন মাস আগে পারভীনকে তালাক দেয়।

এরই একপর্যায়ে জামালপুর ইউনিয়নের পাতিল্যাকুড়া-চকদাড়িয়া (উত্তরপাড়া) গ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে ঠিকঠাক হয় শফিকুলের। শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে শফিকুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে এই দ্বিতীয় বিয়ে করতে মাইক্রোযোগে রওনা হয়। পথিমধ্যে ফকিরপাড়া নামকস্থানে পৌঁছালে সাবেক স্ত্রী পারভীন ও তার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করে। এসময় শফিকুল ও তার যাত্রীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারপিট করে। এতে বর পক্ষের অন্তত ৩ জন আহত হয়।

এদিকে, ওই ঘটনার খরব পেয়ে সাদুল্লাপুর থানার এসআই শফিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে বর শফিকুল ইসলামকে উদ্ধার করে থানা নিয়ে আসে। এরপর শুক্রবার রাতেই থানায় উভয় পক্ষ বসে সাবেক স্ত্রী পারভীনকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রতি দেয় শফিকুল ইসলাম ও তার স্বজনরা। তারপর থানা থেকে দ্বিতীয় বিয়ে করার উদ্দেশে রওনা হয় এই বর।

আরও পড়ুন

বিয়ে করতে যাওয়ার পথে বরের ওপর সাবেক স্ত্রীর হামলা

এ বিষয়ে সাবেক স্ত্রী পারভীন খাতুন বলেন, শফিকুল ইসলাম আমাকে দেনমোহরের টাকা না দিয়ে তালাক দিয়েছে। শুক্রবার সে দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার সময় তাকে আটক করেছি। পরে থানায় বসা হলে আমাকে ৩ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ছাড়া পেয়েছে শফিকুল।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে শফিকুল ইসলাম তার প্রথম স্ত্রী পারভীনকে তালাক দিয়েছে। এরপর শুক্রবার দ্বিতীয় বিয়ে করতে যাওয়ার পথে শফিকুলসহ তার যাত্রীদের ওপর হামলা করে পারভীনের পরিবার। এরপর থানায় বসে সমাধা হওয়ার পরই জামালপুর ইউনিয়নের চকদাড়িয়া-পাতিল্যাকুড়া গ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে করানো হয় শফিকুলকে। ওই গ্রামের রবিউল ইসলামের মেয়ে রিমি খাতুনকে ৩ লাখ টাকা দেনমোহর ঠিক করে বিয়ের কাজ সম্পাদন করা হয়েছে।  

রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছাপের আলী বলেন, সাবেক স্ত্রী পারভীন তার দেনমোহরের দাবিতে শফিকুলকে পথরোধ করেছে বলে শুনেছি।

এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজ উদ্দিন খন্দকার বলেন, দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নেওয়া বর শফিকুলকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর থানায় উভয় পক্ষে সমাধা হওয়ায় শফিকুলকে স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

প্রতিনিধি/এসএস