জেলা প্রতিনিধি
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ এএম
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় দাম্পত্য কলহের জেরে কেরোসিন ঢেলে আগুন দেওয়ার পাঁচ দিন পর বুধবার দুপুরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্ত্রী শারমিন আক্তার (৩০) ও শ্যালক রুবেল হোসেনের (৩২) মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আগুনে দগ্ধ আহত শিরিন আক্তারের অবস্থাও সংকটাপন্ন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত শারমিন আক্তারের স্বামী হাসান আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত শুক্রবার সকালে উপজেলার গওলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এরপর বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঢাকা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মৃত্যুবরণ করেন।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা
সাটুরিয়া থানা পুলিশ, ভুক্তভোগী পরিবার এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে ধামরাইয়ের রাজাপুর গ্রামের হাসান আলীর সঙ্গে সাটুরিয়া উপজেলার গওলা গ্রামের মৃত আতোয়ার হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তারের বিয়ে হয়। এ দম্পতির আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে। কয়েক বছর ধরে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে ‘দাম্পত্য কলহ’ দেখা দেয়। এ নিয়ে হাসান তার স্ত্রী শারমিনকে মারধরও করতেন। এই দাম্পত্য কলহের জেরে গত সোমবার অভিমান করে ছেলেকে নিয়ে শারমিন গওলা গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
শুক্রবার সকালে হাসান শ্বশুরবাড়ি যান। সেখানেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শারমিন পাশের চাচার বাড়িতে যান। সকাল ১০টার দিকে হাসান চাচা শ্বশুরের ঘরের ভেতর গিয়ে শারমিনের শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় চাচী শিরিন আক্তার (৫৫) ও শারমিনের চাচাতো ভাই রুবেল (৩২) তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের শরীরেও কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুকুরে ঝাঁপ দিয়ে অটোরিকশা চালকের মৃত্যু
এতে শারমিন ও তার চাচী শিরিন ও চাচাতো ভাই রুবেলের গায়ে আগুন ধরে যায়। পরে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে তাদের তিনজনের শরীর আগুনে ঝলসে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা তাদের উদ্ধার করে শিরিন ও রুবেলকে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
এদিকে শারমিনকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শারমিন ও রুবেল মারা যান।
সাটুরিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মানবেন্দ্র বালো বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে। ঘটনার পর থেকে আসামি হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সে পুলিশের নজরদারিতে রয়েছে।
প্রতিনিধি/ এমইউ