images

সারাদেশ

মৌলভীবাজারের বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকছে পানি

জেলা প্রতিনিধি

২২ আগস্ট ২০২৪, ০৬:৪২ পিএম

টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার জেলার সদর, রাজনগর, কুলাউড়া, জুড়ী ও কমলগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের অসংখ্য বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেই পানি ধীরে ধীরে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

জানা গেছে, টানা বর্ষণে মনু ও ধলাই নদীর অন্তত ১৩টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে জেলার পাঁচ উপজেলার কমপক্ষে দুই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। জেলায় বৃষ্টিপাত এখনও অব্যাহত রয়েছে। ফলে পানি হু হু করে বাড়ছে। কাটছে না দুশ্চিন্তাও। ভাঙা স্থান দিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় মনুনদের চাঁদনীঘাট পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১১৯ সে.মিটার, মনুনদের রেলওয়ে ব্রীজে পানি ৭০ সে.মিটার, ধলাই নদী রেলওয়ে ব্রীজে পানি ২২ সে.মিটার, জুড়ী নদীতে ১৯৫ সে.মিটার ও কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্টে ১১ সে.মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, মনু নদ ছাড়াও জেলার ধলাই, জুড়ী এবং কুশিয়ারা নদীতেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার উপর দিয়ে। জেলায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতিতে এ পর্যন্ত ১ লক্ষ ২২ হাজার ৬৮৭ জন মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। এরমধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৪ হাজার ৩২৫ জন। খোলা হয়েছে ১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র। মেডিকেল টিম রয়েছে ২৫টি। একইসঙ্গে বন্যার্ত মানুষদের মাঝে বিতরণের জন্য ২০ লক্ষ ৫০ হাজার নগদ টাকা এবং ২৮৫ মেট্রিক টন চাল জিআর খাত থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে রাজনগর উপজেলার কদমহাটা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মনু নদের প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে তীব্র স্রোতে পানি ঢুকছে। পানিতে তলিয়ে গেছে মৌলভীবাজার-কুলাউড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কদমহাটা এলাকা। যার ফলে জেলা সদরের সাথে চারটি উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এছাড়াও কমলগঞ্জ উপজেলায় নতুন করে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ভাঙনে নতুন করে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়। অপরদিকে মনু নদের টিলাগাঁও এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে কুলাউড়া উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম।

স্থানীয়রা জানান, গেল কয়েকদিন থেকে টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলা সবক’টি নদী ও হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ওপর অবস্থান করছে। জেলার রাস্তাঘাট ও নিম্নাঞ্চলের বাসা-বাড়িতে পানি উঠতে শুরু করেছে। জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় নদী প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে জনপদে পানি প্রবেশ করায় দুর্ভোগে পড়েছেন লক্ষাধিক বাসিন্দা।

তবে মৌলভীবাজার শহরের আশপাশে এখনও বাঁধ ভাঙ্গার খবর পাওয়া যায়নি। শহরের মানুষ আতঙ্কে সময় পার করছেন৷ বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের মারত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। শহরবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকার জন্য মাইকিং করা হয়েছে৷ ঝুকিপুর্ণ বিবেচনায় শহরের সেন্ট্রালরোডে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী জাবেদ ইকবাল বলেন, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে মৌলভীবাজারের সবগুলো নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

প্রতিনিধি/ এজে