images

সারাদেশ

বিপদসীমা অতিক্রম করছে কক্সবাজারের নদ-নদীর পানি 

জেলা প্রতিনিধি

০১ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৫৩ পিএম

কক্সবাজারে অব্যাহত ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে জেলার প্রধান নদী মাতামুহুরি, বাকঁখালী ও রেজুখালের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদী ও খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে  পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকটে পড়েছেন বাসিন্দারা।  সৃষ্ট বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় ৩ লাখ মানুষ। বৃষ্টির পানির বন্যায় প্লাবিত হয়েছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার অন্তত ২৫০ গ্রাম।

কক্সবাজারের সদর , চকরিয়া, পেকুয়া,রামু, টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার অন্তত ২৫০ গ্রামের ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।  এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত এলাকা উখিয়া উপজেলা। এসব এলাকায় অতি বৃষ্টিতে দেখা দিয়েছে পাহাড় ধসের আশংকাও। 

মানুষের বাড়ি-ঘরে পানি প্রবেশ করায় আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন হাজারো মানুষ। অনেকের বাড়িতে খাবারের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার থেকে অনাহারে রয়েছেন অনেক মানুষ। 

বৃহস্পতিবার (১ আগষ্ট) দুপুর পর্যন্ত দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছায়নি। 

উখিয়া এলাকার বন্যা কবলিত লোকজন জানান, গতকাল রাত থেকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি আমরা। বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করায় বাড়ির অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। রান্নাঘরে পানি ঢুকায় নষ্ট হয়ে গেছে চুলা ও রান্নার সামগ্রী। এই কারণে আমাদের এলাকায় এখন খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সাথে রয়েছে বিশুদ্ধ পানির সংকট। তবে এখন পর্যন্ত সরকারি কোন সহায়তা আসেনি। 

cox

মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার  টানা বৃষ্টি অব্যাহত থাকে। এতে কক্সবাজার পৌরসভার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রধান সড়কে।

কক্সবাজার পৌরসভার বাসিন্দা  মোস্তফা সরওয়ার জানান- কুতুবদিয়া পাড়া, ফদনারডেইল, মোস্তাক পাড়া, নাজিরারটেক সহ ৮ গ্রাম পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এসব এলাকায় ১০ হাজারের বেশি পরিবারের বসবাস। 

বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার শহরের গোলদিঘীরপাড়, বৌদ্ধ মন্দির এলাকা, কলাতলী, সদর ইউনিয়নের ঝিলংজা ইউনিয়নের ২০ টির বেশি গ্রাম। কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন সড়ক উপ-সড়কে প্লাবিত হয়ে, একপর্যায়ে অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়িতেও ঢুকে পড়ে। এতে অনেক বাড়ি ঘরের আসবাবপত্র, দোকানের মালামাল নষ্ট হচ্ছে।

কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারি আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান - এবার কক্সবাজারে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে।  আগামি কয়েকদিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশংকার কথা জানিয়েছেন তিনি। 

উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির  চৌধুরী জানিয়েছেন, উপজেলার অন্তত লক্ষাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় দেড় লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি রয়েছে।

কক্সবাজার পৌরসভা মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন—জলাবদ্ধতা এই শহরে সবচেয়ে বড় সমস্যা। এই সমস্যা নির্মূলে পৌর পরিষদ কাজ করে যাচ্ছেন। আমরা ইতিমধ্যে নালা-নর্দমা দখলমুক্ত করে নির্মিত স্থাপনা ধ্বংস করে পুণরায় উদ্ধারের কাজ শুরু করেছি।

আরও পড়ুন—

deif

চকরিয়া পৌরসভার মেয়র আলমগীর চৌধুরী বলেন, পাহাড়ি ঢলে মাতামুহুরী নদীর অন্তত ১০টি পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। এসব ভাঙন দিয়ে লোকালয়ে ঢলের পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। মাতামুহুরীর পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রতিনিধি/একেবি