images

সারাদেশ

চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জের কৃষিতে ৬৩ কোটি টাকার ক্ষতি

জেলা প্রতিনিধি

৩১ জুলাই ২০২৪, ০২:১২ পিএম

এবারের বন্যায় সিরাজগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এতে প্রায় ৬৩ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কৃষি বিভাগ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা করে তাদের সহযোগিতা করা হবে। 

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও ১১ দিন বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ বন্যায় সিরাজগঞ্জের কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী, শাহজাদপুর ও সদর উপজেলায় বন্যায় ৩৭ হাজার ৪৬ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। গত ২২ দিন ধরে বন্যায় জেলার ছয় হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় তিন হাজার ১৮৫ দশমিক এক হেক্টর ফসলি জমি। এসব ফসলের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬২ কোটি ৭৮ লাখ তিন হাজার ১২৬ টাকা।

আরও পড়ুন: উন্মুক্ত জলাশয়ে হাঁস পালনে ভাগ্যবদল রবিউলের

ক্ষতিগ্রস্ত কাজীপুর উপজেলার তেকানী গ্রামের সুরুজ আলী জানান, তিন বিঘা জমিতে পটল আবাদ করা হয়েছিল। বন্যার পানিতে তলিয়ে সব জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এতে ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এখন সংসার কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়নের বর্ণি গ্রামের কৃষক আলতাব শেখ জানান, দুই বিঘা জমিতে মিষ্টি লাউ, শিম, কুমড়া এবং দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করা হয়েছিল। বন্যায় পাটের তেমন ক্ষতি না হলেও লাউ, কুমড়ার চারা পঁচে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ৩৫ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।

চৌহালী উপজেলার বাহ্মণগ্রামের কৃষক মোতালেব শেখ বলেন, দুই বিঘা জমিতে বেগুন এবং এক বিঘায় লাউ চাষ করেছিলাম। এবারের বন্যার পানিতে সব পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এই বন্যায় আমার সব নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সংসার কীভাবে চলবে, তা নিয়ে এখন দুর্ভাবনার মধ্যে রয়েছি।

আরও পড়ুন: সাদুল্লাপুরে প্রশিক্ষণ পেলেন ৫০ কৃষক

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে ১১ দিন বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। দেড় সপ্তাহ ধরে যমুনা নদীর পানি কমছে। এ মুহূর্তে যমুনায় পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।

সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বাবলু কুমার সূত্রধর জানান, চলতি বন্যায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের পাট, তিল, আউশ, আমন বীজতলা ও সবজিসহ অন্যান্য ছয় হাজার ৫২৫ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। এর মধ্যে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় তিন হাজার ১৮৫ হেক্টর জমির ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকদের সহায়তার কথাও বলা হয়েছে। সহায়তা পেলে কৃষকরা কিছুটা উপকৃত হবে।

প্রতিনিধি/ এমইউ