জেলা প্রতিনিধি
১৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:৫০ পিএম
বরিশালে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দফায় দফায় দিনভর সংঘর্ষে বরিশাল নগরীর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।
বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে মহাসড়কের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল ও চৌমাথা এলাকায় অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। এরপর পুলিশ ও শিক্ষার্থী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে মুহুমুহ টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।
এসময় দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় আন্দোলনকারীদের। ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, সাধারণ পথচারী, পুলিশ-সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। আহতদের তালিকায় পুলিশের উপপুলিশ কমিশনারসহ ১৮ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে জানা গেছে। অন্যদিকে সাংবাদিক আহত অন্তত ৮ জনের মত। এর রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ৮টায়ও পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা চলছিলো।
এসময় শিক্ষার্থীরা দুই পয়েন্টের চারদিকের অলিগলিতে অবস্থান নিয়ে প্রতিরোধ করে। এসময় পুলিশ গলির মধ্যে টিয়ার সেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল নথুল্লাবাদে অবস্থান নেয় বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে মহাসড়কের হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকায় অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীদের আরেকটি গ্রুপ। তারা মহাসড়কে গাছসহ বিভিন্ন জিনিস ফেলে আটকে দেয়। এরপরই সাধারণ শিক্ষার্থী ও পুলিশ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল ছুড়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে লাঠিসোটা দেখা যায়। পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ারসেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে মারে। এতে শিক্ষার্থীদের একাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়। এরপর আহতরা মহাসড়কের আশপাশের গলিগলিতে অবস্থান নেন। আন্দোলনকারীরা মহাসড়কের দুটি পয়েন্টের চারদিকে অবস্থান নিয়ে পুলিশকে ঘিরে ধরে। এভাবে দিনভর ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, পুলিশ, সাংবাদিক আহত হন।
আহত শিক্ষার্থীরা বলেন, কোটা সংস্কারের আন্দোলনে পুলিশ অবৈধভাবে হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের অসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হয়েছে। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে এ আন্দোলন থেকে পিছু হটবে না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দিতে টিয়ারশেল আর সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে কি সংখ্যক টিয়ারশেল আর সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহৃত হয়েছে, তার সঠিক হিসাব এই পুলিশ কর্মকর্তা জানাতে পারেনি।

এ বিষয়ে বরিশাল পুলিশ কমিশনার জিহাদুল কবিরের মোবাইল ফোনে কল দিলে তিনি পরে বিস্তারিত জানাবেন বলে এ প্রতিবেদককে জানান। এদিকে একই দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের সামনের মহাসড়ক দুপুর ৩টা থেকে অবরোধ করে রেখেছে। এর রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ৮টায় অবরোধ চলছিলো বলে জানা গেছে।
প্রতিনিধি/একেবি