উপজেলা প্রতিনিধি
১০ জুলাই ২০২৪, ১২:১০ পিএম
গর্বের প্রতীক চ্যাম্পিয়ন ‘ট্রফি’ এখন পড়ে আছে বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত কক্ষের মেঝেতে। যার পাশেই অবস্থান করছে বিদ্যালয়ের শৌচাগার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র সোহাগ সামাদ। আর এতে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলো বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং সেই সময়ের চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়রা।
সময়টা ১৯৯৩ সাল। তখনকার আন্তঃস্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট যেটি সর্বমহলে 'জুনের খেলা' নামে পরিচিত ছিল। পুরো উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছিল সেই টুর্নামেন্টে। মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দুরন্ত কিশোরদের শারিরীক সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে গঠন করা হয়েছিল একটি শক্তিশালী ফুটবল টিম। সবার সঙ্গে লড়াই করে ওই আসরে ফাইনালে করেরহাট হাবিলদারবাসা উচ্চ বিদ্যালয়কে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে মিরসরাই পৌর সদরের অবস্থিত তৎকালীন মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। যার বর্তমান নাম মিরসরাই সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় দল।
সেই সময়ের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ফুটবল টিমের অধিনায়ক আশিকুর রহমান নিপু বলেন, আমাদের সোনালী অতীতের অর্জন আজ আস্তাকুঁড়ে।
বিদ্যালয়ের ৯৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড় পাবেল বলেন, এই চ্যাম্পিয়ন চিহ্ন আমাদের গৌরবের অর্জন। আজ সেটি এভাবে অবহেলিত হয়ে আছে যা নতুন প্রজন্মের ওপর অবশ্যই খারাপ প্রভাব ফেলবে। এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত।
বিদ্যালয়ের ৯৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন পিটুর দেওয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস থেকে জানা যায়, রৌদে শুকিয়ে, বৃষ্টিতে ভিজে প্রশিক্ষণ নিয়ে মিরসরাইয়ের আওলিয়াদের কবর জিয়ারত করে দল সাজিয়েছে মিরসরাই পাইলট উচ্চ বিদ্যাল। গোল কিপারের দায়িত্বে ছিলেন শওকত, ২ নম্বর গোলকিপার রবিউল হোসেন। ডিফেন্সে ছিলেন মোতাহার হোসেন, মীর হোসেন, বিল্টু কুমার সিংহ, হাফ বেগ নুরুনবী, লেফট উইং পাভেল, রাইট উইং এলাহী, লেফট ব্যাক রাহাত, রাইট ব্যাক সুমন,স্ট্রাইকার নিপু, টিটুসহ অন্যান্যরা।
ফাইনাল খেলে জয় লাভ করে আন্তঃস্কুল ফুটবল চ্যাম্পিয়ন হয়ে আজকের এই অবহেলিত সীল নিয়ে কি যে আনন্দ। মিছিলে মিছিলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ফুটবল একাদশকে সেলুন ওয়ালা ফ্রি চুলকাটার দায়িত্ব নিয়েছিল, রেস্তোরাঁ মালিক ফ্রি খেতে দিয়েছিল। আম জনতা আনন্দে বিভোর ছিল। আজকের এই অবহেলিত সীলকে কেন্দ্র করে কত উন্মাদনা। এই সীল তখনকার সব ফুটবল ভক্তের আবেগ। তাই যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এই সীলকে সর্বোচ্চ সন্মানের সঙ্গে যথাস্থানে রেখে আমাদের আবেগকে চিরস্থায়ী মূল্য দিবেন।
এ বিষয়ে জানতে মিরসরাই সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন বলেন, এটি তথ্য বিভ্রাট। এমনটি ঘটেনি। সব চ্যাম্পিয়ন ট্রফি আমরা সংরক্ষণ করে রেখেছি। লাইব্রেরি রুমে পরিষ্কার করে রাখার জন্য সেটি রেখেছিল। ফেসবুকে কেউ না জেনে পোস্ট দিলে কিছু করার নেই।
প্রতিনিধি/এসএস