images

সারাদেশ

সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের লাশের সন্ধান মেলেনি

জেলা প্রতিনিধি

২২ মে ২০২৪, ০১:৫১ পিএম

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে এই সংসদ সদস্য খুন হয়েছেন বলে তথ্য পেয়েছে বাংলাদেশের পুলিশ।

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর ঝিনাইদহের কালিগঞ্জে এমপির বাড়ির সামনে  হাজার হাজার নেতা কর্মী জড়ো হয়েছেন। সর্বত্র কান্নার রোল পড়ে গেছে। স্থানীয় অন্যান্য জনপ্রতিনিধি যারা আছেন তারাও এসেছেন। বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসেছেন, সাধারণ মানুষ এসেছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং কালিগঞ্জ কালীগঞ্জ থানার ওসি আনোয়ারুল আজীমের বাড়ির সামনে অবস্থান করছেন। 

পুলিশ এবং পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, লাশ আনার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।  রাষ্ট্রীয়ভাবেই তার লাশটি আনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। 

আনোয়ারুল আজীমের বড় মেয়ে ডরিন গতকাল ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু ভিসা পাননি। আজ পূনরায় আবেদন করবেন। ভিসা হওয়া মাত্রই তারা ভারতের উদ্দেশে রওনা হবেন।

নিহত এমপির পরিবার এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এই হত্যার সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সেই সাথে কেন তাকে হত্যা করে হয়েছে সেটি হতে দেখার কথা বলেছেন তারা।

পুলিশ সূত্র জানায়, ভারতে গিয়ে ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আনোয়ারুল কলকাতায় তাঁর পূর্বপরিচিত বন্ধুসম্পর্কীয় গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ওঠেন। গোপালের সঙ্গে তাঁর ২৫ বছরের পারিবারিক সম্পর্ক রয়েছে। ১৩ মে বেলা ২টার (কলকাতার স্থানীয় সময়) দিকে আনোয়ারুল চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার কথা বলে গোপাল বিশ্বাসের বাসা থেকে বের হন। তখন গোপালকে বলে যান, তিনি সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আসবেন। এরপর আর বাসায় না ফেরার কারণে ১৮ মে কলকাতার বরাহনগর থানায় গোপাল বিশ্বাস একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

গোপাল বিশ্বাস জিডিতে উল্লেখ করেন, ‘আনোয়ারুল আজীমের সঙ্গে তাঁর ২৫ বছর ধরে পারিবারিক সম্পর্ক। ১২ মে সন্ধ্যা ৭টার দিকে আনোয়ারুল আজীম কলকাতার মণ্ডলপাড়া লেনে তাঁর (গোপাল বিশ্বাস) বাড়িতে আসেন। তিনি কলকাতায় আসেন ডাক্তার দেখাতে। পরদিন (১৩ মে) স্থানীয় সময় (কলকাতা) বেলা পৌনে ২টার দিকে ডাক্তার দেখানোর জন্য গোপাল বিশ্বাসের বাড়ি থেকে বের হন আনোয়ারুল আজীম। যাওয়ার সময় তিনি (আনোয়ারুল) বলে যান, দুপুরে খাবেন না। সন্ধ্যায় ফিরে আসবেন। পরে তিনি কলকাতা পাবলিক স্কুলের সামনে এসে নিজেই গাড়ি ডেকে চলে যান।’

আরও পড়ুন

ভারতে নিখোঁজ ঝিনাইদহের এমপি আনারের মরদেহ উদ্ধার

জিডির তথ্য অনুযায়ী, আনোয়ারুল আজীম সন্ধ্যায় গোপাল বিশ্বাসের বাসায় ফেরেননি। আনোয়ারুল আজীমের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে গোপালকে একটি বার্তা পাঠিয়ে জানানো হয়, বিশেষ কাজে তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। সেখানে পৌঁছে তিনি ফোন করে গোপাল বিশ্বাসকে জানাবেন, গোপাল বিশ্বাসের ফোন করার দরকার নেই। পরে ১৫ মে স্থানীয় সময় বেলা ১১টা ২১ মিনিটে আনোয়ারুল আজীমের নম্বর থেকে হোয়াটসঅ্যাপে আরেকটি বার্তা আসে। তাতে আনোয়ারুল আজীমের দিল্লি পৌঁছানোর কথা জানিয়ে বলা হয়, ‘আমার সঙ্গে ভিআইপিরা আছেন, ফোন করার দরকার নেই।’ আনোয়ারুল আজীমের নম্বর থেকে একই বার্তা বাংলাদেশে তাঁর বাড়ির লোকজন এবং ব্যক্তিগত সহকারীকে পাঠানো হয়।

কলকাতা পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, আনোয়ারুল আজীম খুন হয়েছেন কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জিভা গার্ডেন্সের একটি ফ্ল্যাটে।

এরপর ১৬ মে আনোয়ারুলের নম্বর থেকে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রউফের নম্বরে একটি ফোন আসে বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বলা হয়, ব্যক্তিগত সহকারী ফোন ধরতে পারেননি। পরে আনোয়ারুল আজীমকে তিনি (ব্যক্তিগত সহকারী) ফোন করেও আর যোগাযোগ করতে পারেননি। পরদিন ১৭ মে আনোয়ারুলের মেয়ে গোপাল বিশ্বাসকে ফোন করে জানান, তাঁর বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তারপর তিনি আনোয়ারুলের পরিচিতজনের ফোন করেন। কিন্তু তাঁর কোনো সন্ধান মেলেনি।