images

সারাদেশ

মানিকগঞ্জে জমি দখল করে সেতুসহ বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ

জেলা প্রতিনিধি

১৪ মে ২০২২, ০৬:৩১ পিএম

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মহাদেবপুর ইউনিয়নের মশুরিয়া এলাকায় ক্রপপি ফুড এ্যান্ড বেভারেজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান, সড়ক ও জনপদের বিভাগর জায়গায় কোন অনুমতি না নিয়ে ঢাকা-অরিচা মহাসড়ক সংলগ্নে সেতু ও বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করেছেন। সড়ক ও জনপদের আপত্তির মুখেও কাজ অব্যাহত রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রপপি ফুড এ্যান্ড বেভারেজ নামের প্রতিষ্টানটি মুশুরী এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন সড়ক ও জনপথ বিভাগের খালের পাশে বিশাল কৃষি জমি কিনে ইতিমধ্য মাটি ভরাট করে একটি কারখানা নির্মান করছেন। বর্তমানে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক থেকে খাল পারাপারের জন্য নির্মান করছে একটি কালভার্ট। পাশাপাশি কারখানার বাউন্ডারি ওয়ালের নির্মাণ কাজও চলছে।

সড়র ভবনে খোজ নিয়ে জানা যায়, জনপদ বিভাগের অনুমোদন না নিয়ে। ক্রপপি ফুট এ্যান্ড বেভারেজ প্রতিষ্ঠানটির মালিক পক্ষ ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন খালে কালভার্ট নির্মাণ করেছেন ও খালের জমি দখল করে কারখানার বাউন্ডারি ওয়ালও নির্মাণ করছে।

এ ব্যাপারে নির্মানধীন কারখানায় গিয়ে কথা বলার চেস্টা করলে দায়িত্বশীল কাওকে পাওয়া যায়নি।

মহাদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদে খোজ নিয়ে জানা গেছে, আবেদনের প্রেক্ষিতে গত এপ্রিল মাসে ৯তারিখে প্রতিষ্টানটির নামে একটি ট্রেড লাইসেন্ত ইস্যু করা হয়েছে।

মাহাদেবপুর ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত  চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান জানান, ট্রেডলাইসেন্স নেয়ার আগেই প্রতিষ্টানটি তাদের কারখানার অবকাঠামো নির্মান শুরু করে বলে জানান। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নথি সুত্রে জানান ক্রপপি ফুড এ্যান্ড বেভারেজের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হচ্ছে অশোক সেন গুপ্ত নামের এক ব্যক্তি।    

মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী গাউসুল হাসান মারুফ কালভার্ট ও খালের মধ্যে ওয়াল নির্মাণ প্রসঙ্গে বলেন, ওই প্রতিষ্ঠান কোন অনুমতি নেয়নি। গোপনে কালভার্ট নির্মাণ করছিল। নজরে আসারপর কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পক্রিয়া চলছে।

তিনি আরও বলেন, খালের ওপর অনেকেই বিনা অনুমতিতে এবং সড়ক ও জনপথের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কালভার্ট নির্মাণ করেছে। অনেকে রাস্তা বানিয়েছে। কিংবা দখল করে নিয়েছে। ভবিষ্যতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক প্রশস্তকরনের সময় সমস্যার সৃষ্টি করবে। এ বিষয়ে প্রশাসনের সাথে আলাপ আলোচনা চলছে। শিঘ্রই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ কারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।

সড়ক ও জনপথ সুত্রে জানা গেছে, ষাটের দশকে জনসাধারণের জমি অধিগ্রহণ করে নির্মাণ করা হয় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। ঢাকার আমিন বাজার থেকে আরিচা ঘাট পর্যন্ত সড়কটি দৈর্ঘ প্রায় ৫০ কিলোমিটার। সড়কটি নির্মাণ করার জন্য অধিগ্রহন করা হয় সাধারণ মানুষের ফসলি জমি। রাস্তার প্রসস্থতা  স্থানভেদে ২৫০ থেকে ৩০০ ফুট। পাশ থেকে মাটি কেটে মাঝ বরাবর উঁচু করে সড়কটি নির্মাণ করা হয়।  ফলে ঢাকা থেকে আরিচা পর্যন্ত পুর্ব-পশ্চিম লম্বালম্বি সড়কটির উত্তর পাশ সংলগ্ন প্রসস্ত একটি খালের সৃষ্টি হয়। রাস্তার দুই পাশে বর্ষা মৌসুমের পানি স্বাভাবিক প্রবাহের জন্য  কয়েকটি নদীর ওপর বড়বড় সেতু ছাড়াও নির্মাণ করা হয় প্রায় ৫০টি কালভার্ট। বেশ গভীর খালটিতে একসময় সারা ব্ছরই পানি থাকতো। সারা বছরই মাছ ধরতো জেলে কিম্বা স্থানিয়রা। কৃষকরা খালের পানি দিয়ে সেচ দিত জমিতে। বছরের অন্তত ছয়মাস পণ্য ও যাত্রী বাহী নৌকা চলতো।

কিন্তু গত ৯০ দশকের শেষ  থেকে খালের উত্তর পাড়ে গড়ে উঠতে থাকে বাড়িঘর, ইট ভাটাসহ বিভিন্ন কল কারখানা। আর তখন থেকেই খালটি মুলত দখল হতে থাকে। বাড়ি ঘরসহ গড়ে তোলা বিভিন্ন স্থাপনায় যাতায়াতের জন্য  কেও কেও খালে মাটি ভরাট করে রাস্তা বানিয়েছে। আবার কেও কেও পাকা কালভার্ট স্থাপন করেছে। ভরাট করার ফলে সেখানে পানি প্রবাহ একদমই বন্ধ হয়ে গেছে। আর নিচু কালভার্টের স্থানে পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। নব্বই দশকে  শুরু হলেও ২০১০ সালের পর থেকে খাল দখল বেপরোয় পর্যায়ে পৌছেছে। গত কয়েক দিন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে মানিকগঞ্জর প্রায় ২৫ কিলোমিটার অংশ  সরজমিনে ঘুরে দেখাগেছে অসংখ্য স্থানে খালের  উপরে কালভার্ট কিম্বা মাটি ফেলে ভরাট করে ফেলা হয়েছে। চলমান রয়েছে বেশ কয়েকটি।

এজে