images

সারাদেশ

যেকোনো মূল্যে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার ও অস্ত্র উদ্ধার করা হবে: আইজিপি

জেলা প্রতিনিধি

০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:০৭ পিএম

পার্বত্য এলাকায় সন্ত্রাস দমন করে যেকোনো মূল্যে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

বুধবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে রুমা উপজেলা সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি, পুলিশের অস্ত্র লুট ও ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণের বিষয়ে পরিদর্শনে আসলে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।

আইজিপি বলেন, ব্যাংকে লুটপাট করা হয়েছে, অস্ত্র লুট করে ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ করা হয়েছে। আমরা সার্বিক বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছি। ম্যানেজার ও অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে । যেকোনো মূল্যে সন্ত্রাস দমন করে অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজার ও লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা হবে বলে জানান তিনি। 

গতকাল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে সাড়ে ৮টায় রুমা মসজিদে তারাবি নামাজ পড়ার সময় একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী মসজিদের সবাইকে জিম্মি করে সোনালী ব্যাংক ম্যানেজারকে জানতে চাইলে সবাই চুপ করে থাকে। এক পর্যায়ে ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে সঙ্গে করে ব্যাংকে নিয়ে গিয়ে গেইট ভেঙ্গে অফিসে থাকা অফিস সরঞ্জাম নষ্ট করে ফেলে। ব্যাংক নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মারধর করে মোট ১৪টি আগ্নেয়াস্ত্র লুট করে এবং ব্যাংক ম্যানেজার মো. নেজাম উদ্দিনকে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

রুমা সোনালী ব্যাংকের ক্যাশিয়ার উথোয়াইচিং মারমা জানান, ডরমিটরির বাইরে যুবউন্নয়ন অফিসের পাশে চায়ের দোকানে চা খাইতে গেলে মুখে কালি লাগানো অপরিচিত ৩ জন লোক অস্ত্রের মুখে দাড় করায় এবং শরীরে তল্লাশি চালিয়ে পকেটে থাকা এক হাজার ৫০০ টাকা ও ব্যাংকের চাবি নিয়ে নেয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী আসার পর ব্যাংকে গিয়ে দেখেন অফিস সরঞ্জাম গুলো ছড়ানো ছিটানো রয়েছে। এছাড়া তার জানামতে ভল্টের ভিতর ১কোটি ৫৯লক্ষ টাকা জমা ছিল। ভল্টের দুইটি চাবির মধ্যে তার কাছে ১টি এবং অপহরণের শিকার ম্যানেজারের নিকট অপরটি থাকত। ভল্ট না খোলা পর্যন্ত টাকা লুটের বিষয়ে নিশ্চিত ভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না।

এদিকে বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টার দিকে থানচি বাজারে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ডাকাতদল সাধারণ গ্রাহক ও কর্মকর্তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি রুমে বন্ধ করে রাখে। পরে ব্যাংকের ক্যাশ থেকে টাকা লুট করে পালিয়ে যায়।

তারও আগে, মঙ্গলবার রাতে বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা চালিয়ে টাকা ও ব্যাংকের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ১৪টি অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। অপহরণ করা হয় রুমা শাখার ম্যানেজার মো. নেজাম উদ্দিনকে।

এমতাবস্থায় নিরাপত্তাজনিত কারণে ৬ উপজেলায় সকল ব্যাংক পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবান সোনালী ব্যাংকের এজিএম ওসমান গনি।

পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন বলেন, পুলিশের ৮টি চায়না রাইফেল, ২টি এসএমজিসহ ১০টি অস্ত্র ও ৩৮০ রাউন্ড গুলি, আনসারের ৪টা শর্টগান ৩৫ রাউন্ড গুলিসহ ১৪টি অস্ত্র লুট করেছে সন্ত্রাসীরা। তবে কে বা কারা করেছে ক্রাইম টিম আসলে তারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে তদন্ত করবে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানান, সোনালী ব্যাংকের ঘটনা সম্পর্কে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ, ব্যাংকের ভল্ট চেক করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রাইমসিন টিম আসলেই বুঝা যাবে টাকা খোয়া গেছে কিনা? ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করার জন্য পুলিশ, র‍্যাব, সেনাবাহিনীর অভিযান অব্যাহত আছে। আতংকিত হওয়ার কিছু নেই, সর্বোচ্চ নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রতিনিধি/এমএইচটি