জেলা প্রতিনিধি
০১ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৩৫ এএম
গাজীপুরে শ্রীপুরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের অবহেলায় ইয়াছমিন আক্তার (৩০) নামের এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এসময় কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে গেলে উত্তেজিত স্বজনেরা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রোববার (৩১ মার্চ) রাত পৌনে ১২টায় জেলার শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
রাত সোয়া ১২টার দিকে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসা ও শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ইয়াছমিন আক্তার গাজীপুর সদর উপজেলার বানিয়ারচালা পালপাড়া গ্রামের ব্যবসায়ী মো. আসাদুল্লাহ্'র স্ত্রী। তিনি রোববার বিকেলে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
নিহতের স্বামী মো. আসাদুল্লাহ্ জানান, প্রসূতি ইয়াসমিন রোববার দুপুর ১২টার দিকে প্রসব বেদনা নিয়ে শ্রীপুর পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে আসেন। হাসপাতালে আসার পর কর্তৃপক্ষ ওই প্রসূতির সিজার করার কথা জানান। পরবর্তীতে ১৪ হাজার টাকায় ওই প্রসূতির সিজারে চুক্তিবদ্ধ হন এবং রমজান মাস থাকায় ইফতারের পর সিজার করা হবে বলে জানানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বেলা ৪টার দিকে হঠাৎ করে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেন। সিজারের পর ওই প্রসূতি নারী এক ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। পরে অপারেশন থিয়েটার থেকে ওই প্রসূতিকে কেবিনে স্থানান্তর করা হলে প্রসূতির রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের বিষয়টি জানালে তারা প্রসূতিকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ প্রয়োগ করেন। এরপরও রক্তক্ষরণ না থামায় রাত ৯টার দিকে প্রসূতি নিস্তেজ হয়ে পড়লে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে প্রসূতির স্বজনেরা পার্শ্ববর্তী হাসপাতাল থেকে অন্য ডাক্তার এনে রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান। এসময় তার পালস্ পাওয়া না গেলে কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়।
নিহতের মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের গাফিলতিতে দুই শিশু আজ এতিম হয়েছে। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকের শাস্তি দাবি করছি।
শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির বলেন, খবর পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি, তারা পালিয়ে গেছেন। নিহতের স্বজনদের কাছ থেকে লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোভন রাংসা। তিনি বলেন, হাসপাতালে এসে প্রসূতির স্বজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। হাসপাতালে বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
প্রতিনিধি/টিবি