images

সারাদেশ

সূর্যমুখী ফুল খেতে সৌন্দর্যপ্রেমী মানুষের ভিড়

জেলা প্রতিনিধি

১৭ মার্চ ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম

গাইবান্ধা সদর উপজেলার মৌমিত আক্তার। কর্মের কারণে থাকেন জেলার বাহিরে। ছুটি পেয়ে বাড়ি এসেছেন। বন্ধু-বান্ধবের কাছে শুনেছেন পাশেই সূর্যমুখী ফুল খেত। উৎসাহ নিয়ে দল বেঁধে মাঠের এই খেতে ঢুকেই তুলছেন একের পর এক ছবি। 

সম্প্রতি এখানে ঘুরতে আসা নাশিত, রাফি ও মারুফের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সূর্যমুখী ফুলের সঙ্গে ছবি দেখেছেন অনেকের। তখন থেকেই একটা সুপ্ত ইচ্ছে মনে লুকানো ছিল। আজ তা বাস্তবে রূপ নিয়েছে। 

সূর্যমুখী ফুল ছোঁয়াসহ মৌমাছির মধু আহরণের বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও নিজের মোবাইল ও ক্যামেরায় ধারণ করে খুশি তারা। পিছিয়ে নেই মেয়েরাও। সেজেগুজে এসে বিভিন্ন সূর্যমুখী ফুলের সাথে বিভিন্ন আঙ্গিকে নিজেদের ছবি তুলতে ব্যস্ত তারা। 

জেলার সৌন্দর্যপ্রেমী শুধু উঠতি বয়সী ছেলে-মেয়েই নয়, ভ্রমণপিপাসু অনেক মানুষের বিনোদনের স্থানে পরিণত হয়েছে গাইবান্ধার লক্ষীপুরের মাঠের বাজার এলাবার কৃষক মো. জিয়াউর রহমানের ৩ বিঘা সূর্যমুখী ফুল খেত। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নদীবিধৌত গাইবান্ধা জেলায় ধান, গম, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলের চাষ সর্বত্র দৃশ্যমান। তবে এবারই প্রথম সদর উপজেলার মাঠের বাজার এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে এই ফুল চাষ করছেন উদ্যোক্তা জিয়াউর রহমান। 

জেলার বিভিন্ন স্থানে কমবেশি সূর্যমুখী ফুল চাষ শুরু হলেও মাঠের বাজারে বৃহৎ পরিসরের এই খেতজুড়ে সর্বত্রই হলুদ ফুল আর সবুজ গাছের অপরূপ দৃশ্য। যেন সূর্যের সঙ্গে কথা বলছে একেকটি ফুল। তাই তো সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ব্যতিক্রমধর্মী এ ফুলের ছোঁয়া পেতে ভিড় করেন ভ্রমণপিপাসু ছোট-বড় সকলে। 

উদ্যোক্তা জিয়াউর রহমান জানান- ৭ বিঘা ফসলি জমি রয়েছে তার। বাপ-দাদার আমল থেকে এসব জমিতে ধান চাষ করে আসছেন তারা। তবে এবার এসকেএস ফাউন্ডেশনের এক সদস্যের অণুপ্রেরণায় এবারই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ শুরু করেছেন তিনি। এ চাষে ধানের থেকে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব। জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে রোপন করা হয়েছে এই সূর্যমুখী ফুল। মাত্র ত্রিশ হাজার টাকা খরচে মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে কৃষকের ঘরে উঠবে এই উচ্চ ফলনশীল ফসল। আশা করছেন, বাম্পার ফলনেরও। এরপর প্রক্রিয়াজাতকরণসহ বাজারজাতকরণের জন্য এসকেএস ফাউন্ডেশন সাহায্য করবে বলে জানালেন এ উদ্যোক্তা।   

কৃষকদের বৈচিত্র্যমুখী চাষে উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে ব্যতিক্রমধর্মী এই সূর্যমুখী ফুল চাষে সবধরণের সহায়তা দিচ্ছে এসকেএস ফাউন্ডেশনের এসএমএপি প্রকল্প। এ প্রকল্প ব্যবস্থাপক কৃষিবিদ মো. হারুনর রশিদ বলেন, কৃষকরা সবাই ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। এ জন্য অন্যান্য চাষে অনুপ্রাণিত করতে সূর্যমুখী ফুল চাষ করতে জিয়াউর নামে এই উদ্যোক্তাকে আর্থিক সহযোগিতা করা হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, বাজারজাতকরণের জন্য বিভিন্ন ভোজ্যতেল কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। যারা প্রতিমণ সূর্যমুখী বীজ সর্বোচ্চ ৪ হাজার টাকা দরে কিনবেন। একই সঙ্গে এই বীজ থেকে উৎপাদিত তেলে সয়াবিন অপেক্ষা বেশি স্বাস্থ্যকর। আর এই বীজ গুড়া করে ভর্তাসহ বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে আহার করা গর্ভবতী মায়েদের জন্য অনেক উপকারী বলে উল্লেখ করেন এ কর্মকর্তা।  

প্রতিনিধি/ এজে