images

সারাদেশ

মেয়েকে জমি না দেওয়ায় বাবার লাশ দাফনে বাধা

জেলা প্রতিনিধি

১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:২৯ পিএম

ভোলায় মেয়েকে জমি দেওয়ার কথা বলে ৩০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন বাবা। দীর্ঘ ৭ বছরেরও মেয়েকে জমি কিংবা টাকা কোনোটাই দেয়নি বাবা। তাই বাধ্য হয়ে বাবার মৃত্যুর পর তার লাশ দাফনে আপত্তি জানায় মেয়ে। একপর্যায়ে লাশের খাট নিয়ে ধ্বস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটে।

শেষ পর্যন্ত জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল পেয়ে পুলিশকে ঘটনাস্থলেও যেতে হয়েছে।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে সদর উপজেলার ২ নম্বর পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের চর ইলিশা গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে।

ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মাঈনুল ইসলাম এবং ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. লিটন ঢাকা মেইলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মৃত লুৎফর রহমান (৭৫) ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তার ৪ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। বুধবার ভোররাতে বার্ধক্যজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়।

ইউপি সদস্য লিটন ঢাকা মেইলকে জানান, লুৎফর রহমানের ৪ ছেলে এবং ২ মেয়ে আছে। ২ মেয়ের মধ্যে কোহিনূর বেগম নামে তার এক মেয়ে মেঘনা নদীর তীরে বসবাস করতেন। প্রায় ৭ বছর আগে কোহিনূরের বসতভিটা মেঘনায় বিলীন হয়ে যায়। তখন তার বাবা লুৎফর রহমান তাকে জমি দেওয়ার কথা বলে ৩০ হাজার টাকা নেয়।

নদীর ভাঙনে মেঘনার বুকে বসতভিটা বিলীন হয়ে যাওয়ার পর মেয়েটি নিরুপায় হয়ে বাবার বাড়িতে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেয়। কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছরেও লুৎফর রহমান মেয়েকে জমি বা টাকা কোনোটাই দেয়নি। যার কারণে বুধবার ভোররাতে লুৎফর রহমান মারা গেলে কোহিনূর ও তার স্বামী লুৎফর রহমানের লাশ দাফনে আপত্তি জানায়।

আছর বাদ লুৎফর রহমানের লাশের জানাজা পড়ানোর জন্য মসজিদের মাঠে নিয়ে যেতে চাইলে কোহিনূর ও তার স্বামী লাশের খাট ধরে ধ্বস্তাধস্তি করেন। একপর্যায়ে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল দিয়ে পুলিশের সহযোগিতাও চাওয়া হয়।

এ জনপ্রতিনিধি আরও জানান, লুৎফর রহমান জীবিত থাকা অবস্থায় এ ঝামেলা নিয়ে একাধিকবার সালিশ বিচার হয়েছে। কিন্তু তখনও কোনো ফয়সালা হয়নি। শেষ পর্যন্ত বুধবার বিকেলের এ ঘটনা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান। এরপর তার মেয়েকে ও মেয়ের স্বামীকে বুঝিয়ে শুনিয়ে লাশ দাফন করেন। সোমবার তিনিসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কোহিনূর বেগমের জমির ফয়সালায় বসবেন।

ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. মাঈনুল ইসলাম জানান, জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ খবর পেয়ে তিনি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। গিয়ে দেখেন লুৎফর রহমানের লাশ দাফন করা হয়ে গেছে। ইউপি সদস্য লিটন তাকে জানিয়েছে, কোহিনূর বেগমের জমির ফয়সালাটি তারা স্থানীয়ভাবে বসে সালিসি বৈঠকের মাধ্যমে করে দিবেন।

প্রতিনিধি/এসএস