নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:০৫ এএম
পৌষের শুরুতে তেমন একটা ঠান্ডা না থাকলেও মাসের শেষ দিকে এসে জেঁকে বসেছে শীত। রাত থেকে শুরু হওয়া ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল হাওয়া বয়ে যাওয়ায় উত্তরের জেলা রংপুরের মানুষের জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ। বিশেষ করে গরিব ও ছিন্নমূল মানুষের কষ্ট অবর্ণনীয়।
কয়েকদিন ধরেই উত্তরের এই জেলায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। বিশেষ করে গত তিন দিন ধরে দিনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অধিকাংশ সময়ই আকাশ থাকছে মেঘাচ্ছন্ন। একই সঙ্গে নামছে তুষারের মতো কুয়াশা।
সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত বৃষ্টির মতো টিপ টিপ করে কুয়াশা ঝরছে। ঘনকুয়াশায় কয়েক হাত দূরের কোনো কিছু দেখা যাচ্ছে না। কুয়াশার কারণে দিনের বেলায় যানবাহনগুলো হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।
প্রচণ্ড শীতে মানুষ অতি প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে বেরোচ্ছে না। শীতবস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা কাহিল।
অনেকে খড়কুটোয় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শীত নিবারণের জন্য গরম কাপড় কিনতে নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষেরা ভিড় করছে জেলার মার্কেটগুলোতে।
শীতের তীব্রতায় বৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি কাবু হয়ে পড়েছেন। দিনমজুর ও ক্ষেতে কাজ করা মানুষ পেটের দায়ে কাজে বের হচ্ছেন।
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার সাতগড়া গ্রামের বাসিন্দা শামীম বলেন, ‘এতে শীত যে দিনেও বেলাতেও বাইরে থাকা কষ্টকর হয়ে গেছে। আসরের পরেই ঘরে ফিরতে হচ্ছে। সন্ধ্যার পর ঘর থেকে বেরোনো যাচ্ছে না। সকাল-সন্ধ্যা খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে হচ্ছে। হতদরিদ্র লোকজনের অবস্থা চরম শোচনীয় হয়েছে।’
পার্শ্ববর্তী কুমারগাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, ‘ঘরের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ঘর মুহূর্তের মধ্যেই ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। দিনের বেলাতেও সূর্য দেখা যাচ্ছে না। মনে হয় সূর্য ছুটি নিয়েছে।’
আরও পড়ুন
শুধু রংপুর নয়, সারাদেশেই জেঁকে বসেছে শীত। শীতের এমন অবস্থা জানুয়ারিজুড়েই থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিধদফতর। এছাড়া ২০ জানুয়ারির পর শৈত্যপ্রবাহের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে যথাক্রমে ২২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ১৩ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকলেও আগামী তিনদিন আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এ সময় মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে, যা দুপুর পর্যন্তও থাকতে পারে।
কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগে সাময়িকভাবে বিঘ্ন ঘটতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধিসহ দেশের কোথাও কোথাও দিনে ঠান্ডা পরিস্থিতি থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক জানান, ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারির দিকে দেশজুড়ে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়া ও ঝড়ো বাতাসসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টিপাত থেমে গেলে তাপমাত্রা কমে গিয়ে ২০ তারিখের পরে আবারও মৃদু বা মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।
এমআর