images

সারাদেশ

পঞ্চমবারের মতো এমপি হলেন হাই

জেলা প্রতিনিধি

০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:৩১ পিএম

এবারের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝিনাইদহ -১ (শৈলকুপা) আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিপুল ভোটে বেসরকারিভাবে জয়লাভ করেছেন আব্দুল হাই (এমপি)। এ নিয়ে তিনি পঞ্চমবারের মতো ওই আসন থেকে এমপি হিসেবে জয়লাভ করলেন।

জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে বেসরকারি ফলাফলে দেখা যায়, ঝিনাইদহ-১ আসনে নৌকার প্রার্থী আব্দুল হাই এমপি ৯৫ হাজার ৬৭৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল ট্রাক প্রতীক নিয়ে ৭৯ হাজার ৭২৮ ভোট পেয়েছেন।

এছাড়াও ওই আসনে জাতীয় পার্টির মনিকা আলম লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছেন ৩৯৪ ভোট, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আনিছুর রহমান আম প্রতীকে ২৩৮ ভোট , তৃণমূল বিএনপির কে. এ জাহাঙ্গীর মজমাদার সোনালী আঁশ প্রতীকে ১৬১ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিয়া আফরিন ফুলকপি প্রতীকে পেয়েছেন ১৫৯ ভোট।

জানা যায়, ঝিনাইদহ-১ ( শৈলকুপা উপজেলা) একটি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ছয় হাজার ৩৩৬টি। এর মধ্যে পুরুষ ভোটর এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৭৭টি, নারী ভোটার এক লাখ ৫২ হাজার ৭৫৯টি। এই আসনে নতুন ভোটার ২৯ হাজার ৯৯৮ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ১১৭টি। যার মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ছিল ৬৫টি।

আব্দুল্লাহ হাই সম্পর্কে জানা যায়, তিনি ১৯৬৮ সালে মহকুমা ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৯ সালে সরকারি কেসি কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি বৃহত্তর যশোর জেলা ছাত্রলীগের সহ- সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে তিনি ওই যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং ঝিনাইদহে স্বাধীন বাংলার প্রথম পতাকা উত্তোলন করেন তিনি। 

দেশ স্বাধীনের পর ঝিনাইদহ যুবলীগের আহবায়ক ও ১৯৭৩ সালে যুবলীগের মহকুমা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আশির দশকে জেলা আওয়ামী লীগের যুব ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯৬ সালে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। পরে ১৯৮৭ সালে তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। 

২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ঝিনাইদহ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সারাদেশে মাত্র ৫৮টি আসনে বিজয় লাভ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আসন ছিল বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই-এর শৈলকুপার আসন। স্বাধীনতার টানা ৩০ বছর পর তিনি বিএনপির হাত থেকে শৈলকুপা আসনটি আওয়ামী লীগের দখলে রাখেন। বর্তমান ঝিনাইদহ জেলার মধ্যে এই আসনটিকে আওয়ামী লীগের দূর্গ বলা হয়।

এছাড়া ২০০১ সালে তিনি ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক নির্বাচিত হন, ২০০৫ সালে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। তিনি ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনি মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। 

২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হয়ে পুনরায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৫ সালের কাউন্সিলে দ্বিতীয়বারের মতো ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন এবং ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়ে একাদশ সংসদ নির্বাচনেও সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি অষ্টম, নবম, দশম, একাদশ পরপর চারবারে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং ২০২২ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তৃতীয়বারের মতো জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।

বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন, এই জয় শুধু আমার নয়, এই জয় শৈলকুপার সাধারণ মানুষের, নৌকার জয় এবং শেখ হাসিনার জয়।

এমইউ