images

সারাদেশ

পানছড়িতে হত্যাকাণ্ড: ইউপিডিএফের হরতাল-অবরোধ-বাজার বয়কটের ঘোষণা

জেলা প্রতিনিধি

১২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:০৪ পিএম

images

খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলাতে দুর্বৃত্তদের দ্বারা গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পিসিপির সাবেক সভাপতি বিপুল চাকমাসহ চার জনকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনগুলো তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, হরতাল, সড়ক অবরোধ ও বাজার বয়কটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নিহতের মরদেহের সুরতহাল ও লাশ উদ্ধার করা হয়নি দাবি করে প্রশাসনের দিকে আঙ্গুল তুলছে ইউপিডিএফের শীর্ষ নেতারা।

মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রবি শংকর চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি জিকো ত্রিপুরা, পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের সভাপতি নীতি চাকমা ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অংকন চাকমা এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

হত্যাকাণ্ডকে জঘন্য, ন্যাক্কারজনক ও কাপুরুষোচিত আখ্যায়িত করে বলেন, ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীগুলোর সন্ত্রাসী অপতৎপরতার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ নেই তা এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আর একবার প্রমাণিত হলো।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তারা বলেন, গতকাল পিসিপির সাবেক সভাপতি ও গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিপুল চাকমা (৩২), পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সুনীল ত্রিপুরা (২৮), গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ-সভাপতি লিটন চাকমা (২৯) ও ইউপিডিএফ সংগঠক রহিন বিকাশ ত্রিপুরা (৪৯), নীতি দত্ত চাকমা ও হরিকমল ত্রিপুরাসহ ৭ জন নেতাকর্মী যুব সম্মেলন সফল করার জন্য লোগাঙ এলাকায় সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছিলেন। আজ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

ঘটনার সময় রাতে বিপুল চাকমাসহ উক্ত ৭ জন অনিল পাড়া নামক গ্রামে এক ব্যক্তির বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এসময় রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা সময়ের মধ্যে পানছড়ি সদর এলাকা থেকে নব্যমুখোশ দুর্বৃত্তদের একটি সশস্ত্র দল ওই বাড়িতে যায় এবং অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায় একে একে বিপুল চাকমা, সুনীল ত্রিপুরা, লিটন চাকমা ও রুহিন বিকাশ ত্রিপুরাকে গুলি করে হত্যা করে।

তারা চার জনকে হত্যার পর সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে ইউপিডিএফ সংগঠক নীতিদত্ত চাকমা, হরিকমল ত্রিপুরা ও সদস্য প্রকাশ ত্রিপুরাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদের এখনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।

নেতারা উক্ত হত্যাকাণ্ডের দায় সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত সেনা প্রশাসন কোনভাবে এড়াতে পারে না বলে মন্তব্য করেন এবং অবিলম্বে হত্যাকারীদের গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীগুলো ভেঙে দেওয়ার দাবি জানান।

নেতারা বলেন, খুন-গুম করে জনগণের ন্যায্য আন্দোলন দমন করা যায় না। অতীতে অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করার পরও ইউপিডিএফকে আন্দোলন থেকে বিচ্যুত করা যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না। তারা পার্বত্য চট্টগ্রামে অরাজকতা সৃষ্টিকারী এই ঠ্যাঙাড়ে খুনি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এলাকায় গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

এতে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচিতে হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও শাস্তি এবং গঠিত বাহিনী ভেঙে দেওয়ার দাবিতে ইউপিডিএফ ও সহযোগী সংগঠনগুলো নিম্নোক্ত কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।

কর্মসুচির মধ্যে আছে- ১৩ থেকে ১৫ ডিসেম্বর প্রতিবাদ সমাবেশ ও শোক সভা, বিভিন্ন স্থানে কালো পতাকা উত্তোলন, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি ২০২৪ পর্যন্ত পানছড়ি বাজার বয়কট, (প্রয়োজনে বয়কটের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে।) ১৭ ডিসেম্বর পানছড়ি উপজেলাব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট, ১৮ ডিসেম্বর খাগড়াছড়ি জেলাব্যাপী সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ সড়ক অবরোধ। বিবৃতিতে নেতারা উক্ত কর্মসূচি সফল করার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে আহ্বান জানান।

প্রতিনিধি/এসএস